পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৬
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

যুবতীর একটা লক্ষ্যহীন অভিযান নহে। দায়িত্বশীল কর্ম্মক্ষম যে সকল যুবক-যুবতী চরিত্র ও ব্যক্তিত্ব গঠন করিয়া দেশের কাজ সুচারুরূপে সম্পন্ন করিতে চান, ইহা তাহাদেরই অন্দোলন।” “স্বাধীনতার কোনও সহজ নিরাপদ পথ নাই। স্বাধীনতার পথে যেমন আঘাত-বিপদ আছে, তেমনি গৌরব ও অমরত্বও আছে। প্রাচীনের যাহা কিছু শৃঙ্খলের মত আমাদের চলাকে প্রতিপদে প্রতিহত করিয়া আসিতেছে, আজ তাহাকে ভাঙ্গিয়া ফেলিয়া তীর্থযাত্রীর মত দলে দলে স্বাধীনতার লক্ষ্যপথে যাত্রা করিতে হইবে। স্বাধীনতাই জীবন; স্বাধীনতার সন্ধানে জীবনদানে অবিনশ্বর গৌরব। আসুন আজ আমরা সম্মিলিত হইয়া স্বাধীনতা লাভ করিতে প্রাণপণ চেষ্টা করি—সেই উদ্যমে জীবনপাত করিয়া আমরা মৃত্যুঞ্জয়ী যতীন্দ্রনাথের স্বদেশবাসী হইবার যোগ্যতা লাভ করি।” তিনি আরও বলেন, “জীবনের একটি মাত্র উদ্দেশ্য আছে। তাহা হইল সকল প্রকার বন্ধন হইতে মুক্তি। স্বাধীনতার জন্য উদগ্র আকাঙ্ক্ষাই হইতেছে জীবনের মূল সুর। সদ্যোজাত শিশুর প্রথম ক্রন্দনধ্বনিই তো বন্ধনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ঘোষণা। আপনাদের নিজেদের প্রাণের এবং দেশবাসীর প্রাণে স্বাধীনতার এই তীব্র আকাঙ্ক্ষাটা জাগাইয়া তুলুন। তাহা হইলে ভারতবর্ষ অল্পদিনের মধ্যেই স্বাধীনতা লাভ করিবে।”

 “ভারতবর্ষ স্বাধীন হইবেই, তাহাতে কোনই সন্দেহ নাই। রাত্রির পর যেমন দিন আসিবেই তেমনি ইহাও আসিবে। ভারতবর্ষকে বাঁধিয়া রাখিতে পারে, এমন কোনও শক্তি এ পৃথিবীতে আজ নাই। কিন্তু আসুন এমন মহীয়সী ভারতের ধ্যানচিত্র আজ আমরা গড়িয়া তুলি, যাহার জন্য জীবনসর্ব্বস্বধন বলি দিয়া আমরা ধন্য হইতে পারি।” “স্বাধীনতা বলিতে আমি বুঝি সমাজ ও ব্যক্তি, নর ও নারী, ধনী ও দরিদ্র সকলের জন্য স্বাধীনতা। শুধু ইহা রাষ্ট্রীয় বন্ধন মুক্তি নহে, ইহাতে অর্থের সমান