পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
৭৭

পড়ে। সভাপতি পদের জন্য গান্ধীজির নাম প্রস্তাবিত হইয়াছিল, কিন্তু তিনি সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুকে সভাপতি মনোনীত করেন। এইভাবে বামপন্থীদের অন্যতম শ্রেষ্ঠনেতাকে দক্ষিণপন্থীদল স্বপক্ষে আনিতে সক্ষম হয়। এই সম্পর্কে সুভাষচন্দ্রের উক্তি বিশেষ উল্লেখযোগ্য:—

 “বাম পক্ষের বিরোধিতাকে পর্য্যুদস্ত করিয়া কংগ্রেসে অপ্রতিহত প্রাধান্য পুনঃ প্রতিষ্ঠিত করিবার জন্য পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুকে হাত করা মহাত্মাজির পক্ষে একান্ত প্রয়োজন হইয়া পড়িয়াছিল।······এই কাজে (সভাপতি মনোনয়নে) মহাত্মাজি বিশেষ চাতুর্য্যের পরিচয় দেন। কিন্তু বামপন্থীদলের পক্ষে এই নির্বাচন দুর্ভাগ্যের সূচনা করে। কারণ এই ঘটনা হইতেই মহাত্মাজি ও পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর মধ্যে অধিকতর মতসামঞ্জস্য ও ঘনিষ্ঠতা পরিলক্ষিত হয়; এবং কংগ্রেসে বামপক্ষ ও নেহরুর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। কংগ্রেস-সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর হইতেই জনসেবার ক্ষেত্রেও পণ্ডিত জহরলাল নেহরুর জীবনে সম্পূর্ণ এক নূতন অধ্যায় আরম্ভ হয়; তদবধি একান্ত নিষ্ঠার সহিত পণ্ডিত নেহরু মহাত্মাজিকে সমর্থন করিয়া আসিতেছেন।”

 এদিকে কলিকাতা কংগ্রেসে যে চরমপত্র দেওয়া হইয়াছিল তাহার মেয়াদ উত্তীর্ণপ্রায়। দেশবাসী পূর্ণ স্বাধীনতার সঙ্কল্প গ্রহণ করিতে আগ্রহান্বিত। অবশেষে ৩১শে অক্টোবর তদনীন্তন বড়লাট লর্ড আরউইন ঘোষণা করিলেন যে, ১৯১৭ সালের ঘোষণায় ভারতের ‘শাসন-তান্ত্রিক প্রগতি’ ঔপনিবেশিক স্বায়ত্তশাসন অর্থে ই ব্যবহৃত হইয়াছে। বড়লাটের এই ঘোষণার পর গান্ধীজী, মতিলাল, মালব্য, ডাঃ আনসারী, মুঞ্জে, প্যাটেল, শ্রীযুক্তা নাইডু এমন কি জওহরলালেরও স্বাক্ষরযুক্ত এক ঘোষণা প্রকাশিত হয়—তাহাতে সরকারের আন্তরিকতার প্রশংসা করা হয় এবং ভারতের জন্য ঔপনিবেশিক স্বায়ত্তশাসনের ভিত্তিতে এক শাসন-