পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৯).pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ পরিচ্ছেদ • निशैश्वब्रएछ। সাঙ্খ্যদর্শন নিরীশ্বর বলিয়া খ্যাত ; কিন্তু কেহ কেহ বলেন যে, সাঙ্খ্য নিরীশ্বর নহে। ডাক্তার হল একজন এই মতাবলম্বী। মক্ষমূলর এই মতাবলম্বী ছিলেন, কিন্তু এক্ষণে র্তাহার মত পরিবর্তনের লক্ষণ দেখা গিয়াছে। কুসুমাঞ্জলিকৰ্ত্ত উদয়নাচাৰ্য্য বলেন যে, সাঙ্খ্যমতাবলম্বীরা আদিবিদ্বানের উপাসক। অতএব তঁহার মতেও সাঙ্খ্য নিরীশ্বর নহে। সাঙ্খ্য্যপ্রবচনের ভাষ্যকার বিজ্ঞানভিক্ষুও বলেন যে, ঈশ্বর নাই, এ কথা বলা কাপিল সূত্রের উদ্দেশ্য নহে। অতএব সাঙ্খ্যদর্শনকে কেন নিরীশ্বর বলা যায়, তাহার কিছু বিস্তারিত (लश याटेक । সাস্থ্যপ্রবচনের প্রথমাধ্যায়ের বিখ্যাত ৯২ সূত্র এই কথার মূল। সে সূত্র এই— “ঈশ্বরাসিদ্ধেঃ।” প্রথম এই সূত্রটি বুঝাইব । সূত্রকার প্রমাণের কথা বলিতেছিলেন। তিনি বলেন, প্ৰমাণ ত্ৰিবিধ ; প্ৰত্যক্ষ, অনুমান এবং শব্দ । ৮৯ সূত্রে প্রত্যক্ষের লক্ষণ বলিলেন, “যৎ সম্বন্ধসিদ্ধং তদাকারোল্লেখি বিজ্ঞানং তৎ প্ৰত্যক্ষম।” অতএব যাহা সম্বন্ধ নহে, তাহার প্রত্যক্ষ হইতে পারে না। এই লক্ষণ প্ৰতি দুইটি দোষ পড়ে। যোগিগণ যোগবলে অসম্বন্ধও প্ৰত্যক্ষ করিতে পারেন। ৯০-৯১ সূত্রে সূত্ৰকার সে দোষ আপনীত করিলেন। দ্বিতীয় দোষ, ঈশ্বরের প্ৰত্যক্ষ নিত্য, তৎসম্বন্ধে সম্বন্ধ কথাটি ব্যবহার হইতে পারে না। সূত্ৰকার তাহার এই উত্তর দেন যে, ঈশ্বরই সিদ্ধ নহেন-ঈশ্বর আছেন, এমত কোন প্ৰমাণ নাই ; অতএব তাহার প্রত্যক্ষ সম্বন্ধে না বৰ্ত্তিলে এই লক্ষণ দুষ্ট হইল না। তাহাতে ভাষ্যকার বলেন যে, দেখ, ঈশ্বর অসিদ্ধ, ইহা উক্ত হইয়াছে, কিন্তু ঈশ্বর নাই, এমত কথা বলা হইল না। না হউক, তথাপি এই দর্শনকে নিরীশ্বর বলিতে হইবে। এমত নাস্তিক বিরল, যে বলে যে, ঈশ্বর নাই। যে বলে যে, ঈশ্বর আছেন, এমত কোন প্ৰমাণ নাই, তাহাকেও নাস্তিক বলা যায়। যাহার অস্তিত্বের প্রমাণ নাই, এবং যাহার অনস্তিত্বের প্রমাণ আছে, এই দুইটি পৃথক বিষয়। রক্তবর্ণ কাকের অস্তিত্বের কোন প্ৰমাণ নাই, কিন্তু তাহার অনস্তিত্বেরওঁ কোন প্রমাণ নাই। কিন্তু গোলাকার ও চতুষ্কোণের অনস্তিত্বের প্রমাণ আছে। গােলাকার চতুষ্কোণ মানিব না, ইহা নিশ্চিত ; কিন্তু রক্তবর্ণ কাক মানিব কি না ? তাহার