পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৯).pdf/২০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SIdb V বিবিধ প্ৰবন্ধ-দ্বিতীয় ভাগ করেন, তাহা বুঝিতে হইবে, তিনি ব্যবসাদার হইয়া কি প্রণালীতে ব্যবসা করেন, তাই বুঝিতে হইবে, আর তিনি মহাজানিতে কি করেন, তাহাও বুঝিতে হইবে। তেমনি ঈশ্বরোপাসনায় তাহার কৃত সৃষ্টি স্থিতি প্ৰলয় পৃথক পৃথক বুঝিতে হইবে। এই জন্ম ত্রিদেবের উপাসনা। এক জনেরই কাৰ্য্যানুসারে তিনটি পৃথক পৃথক নাম দেওয়া হইয়াছে। তিন জনের তিনটি নাম নহে। আমি। বুঝিলাম। কিন্তু গোল মিটিতেছে না। বৃষ্টি হইল, তাহাতে শস্য জন্মিল, খাইয়া সবাই বঁাচিলাম । *ाप्नाङ्केल কে—পালনকৰ্ত্তা বিষ্ণু-না বৃষ্টিকৰ্ত্তা ইন্দ্র ? বাবাজি। যাহা বলিয়াছি, তাহা যদি বুঝিয়া থাক, তবে অবশ্য বুঝিয়াছ যে, ইন্দ্ৰ, বায়ু, বরুণ প্রভৃতি নামে কোন স্বতন্ত্র দেবতা নাই। যিনি সৃষ্টি করেন, তিনিই যেমন পালন করেন ও ধ্বংস করেন, তিনিই আবার বৃষ্টি করেন, তিনিই দাহ করেন, তিনিই ঝড় বাতাস করেন, তিনিই আলো করেন, তিনিই অন্ধকার করেন। যিনি ব্ৰহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর, তিনিই ইন্দ্র, তিনিই অগ্নি, তিনিই সর্বদেবতা। তবে যেমন আমাদের বুঝিবার সৌকর্য্যাৰ্থ এক জলকে কোথাও নদী বলি, কোথাও সমুদ্র বলি, কোথাও বিল বলি, কোথাও পুকুর বলি, কোথাও ডোবা বলি, কোথাও গোস্পদ বলি, তেমনি উপাসনার জন্য র্তাহাকে কখন ইন্দ্র, কখন অগ্নি, কখন ব্ৰহ্মা, কখন বিষ্ণু ইত্যাদি নানা নাম निदे । আমি । তবে তাহার যথার্থ নাম কি ? বাবাজি । তাহাকে দুই ভাবে চিন্তা করা যায়। যখন তঁাহাকে অব্যক্ত, অচিন্ত্য, নিগুণ, এবং সৰ্ব্ব-জগতের আধার বলিয়া চিন্তা করি, তখন তাহার নাম ব্ৰহ্ম বা পরব্রহ্ম বা পরমাত্মা। আর যখন তাহাকে ব্যক্ত, উপাস্য, সেই জন্য চিন্তনীয়, সগুণ, এবং সমস্ত জগতের সৃষ্টিস্থিতিপ্ৰলয়কৰ্ত্তাস্বরূপ চিন্তা করি, তখন তাহার নাম সাধারণ কথায় ঈশ্বর, বেদে প্রজাপতি, পুরাণেতিহাসে বিষ্ণু বা শিব। আর যখন এককালীন তাহার উভয়বিধ লক্ষণ চিন্তা করিতে পারি, অর্থাৎ যখন তিনি আমার হৃদয়ে সম্পূর্ণ স্বরূপে উদিত হন, তখন তাহার নাম শ্ৰীকৃষ্ণ । আমি । কেন, তখনই শ্ৰীকৃষ্ণ নাম কেন ? বাবাজি। গীতায় শ্ৰীকৃষ্ণ আপনাকে এই উভয় লক্ষণযুক্ত স্বরূপে ধোয় বলিয়া নির্দিষ্ট করিয়াছেন, এই জন্য আমি তঁহার দাসানুদাস, সেই নামেই তঁাহাকে অভিহিত করি। একবার তোমরা কৃষ্ণনাম কর। বল কৃষ্ণ ! কৃষ্ণ । হরি ! হরি !