পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৯).pdf/২৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গদেশের কৃষক NRG S দিতে স্বীকৃত না হওয়াতে, তাহাকে ধরিয়া আনিয়া পীড়ন আরম্ভ করিলেন। প্ৰজা নালিশ করিল, এবার আশামী “আইন অনুসারে।” খালাস পাইল না। জমীদার মহাশয় এক্ষণে শ্ৰীঘরে বাস করিতেছেন। সৰ্ব্বাপেক্ষা নিম্নলিখিত “হাস্পাতালির” বৃত্তান্তটি কৌতুকাবহ। সাবডিবিজনের হাকিমের স্কুল, ডিস্পেন্সরি করিতে বড় মজবুত। ২৪ পরগণার কোন আসিষ্টাণ্ট মাজিষ্ট্রেট স্বীয় সাবডিবিজনে একটি ডিস্পেন্সরি করিবার জন্য তৎপ্ৰদেশীয় জমীদারগণকে प्लाकाश्ग्रा সভা করিলেন। সকলে কিছু কিছু মাসিক চাদ দিতে স্বীকৃত হইয়া গেলেন। একজন বাটী। গিয়া হুকুম প্রচার করিলেন যে, “আমাকে মাসে মাসে এত টাকা হাস্পাতালের জন্য চাদ দিতে হইবে, অতএব আজি হইতে প্ৰজাদিগের নিকট টাকায় /.০ আনা হাস্পাতালি আদায় করিতে থাকিবে ।” গোমস্তারা তদ্রুপ আদায় করিতে লাগিল । এদিকে ডিস্পেন্সরির সকল যোগাড় হইয়া উঠিল না।--তাহা সংস্থাপিত হইল না। সুতরাং ঐ জমীদারকে কখন এক পয়সা চাদ দিতে হইল না। কিন্তু প্ৰজাদিগের নিকট চিরকাল টাকায় এক আনা হাস্পাতালি আদায় হইতে লাগিল। কয়েক বৎসর পরে জমীদার ঐ প্রজাদিগের খাজানার হার বাড়াইবার জন্য ১৮৫৯ সালের দশ আইনের নালিশ করিলেন। প্ৰজারা জবাব দিল যে, “আমরা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় হইতে এক হারে খাজানা দিয়া আসিতেছি-কখন হার বাড়ে কমে নাই-সুতরাং আমাদিগের খাজনা বাড়িতে পারে না।” জমীদার তাহার প্রত্যুত্তর এই দিলেন যে, উহারা অমুক সান হইতে স্বাস্পাতালি বলিয়া /০ খাজান বেশী দিয়া আসিতেছে। সেই হেতুতে আমি খাজনা বুদ্ধি করিতে চাই । এক্ষণে জমীদারদিগের পক্ষে কয়েকটি কথা বলিবার প্রয়োজন আছে। প্রথমতঃ, আমরা পূর্বেই বলিয়াছি যে, সকল জমীদার অত্যাচারী নহেন। দিন দিন অত্যাচারপরায়ণ জমীদারের সংখ্যা কমিতেছে। কলিকাতাস্থ সুশিক্ষিত ভূস্বামীদিগের কোন অত্যাচার নাই—যাহা আছে, তাহা তাহাদিগের অজ্ঞাতে এবং অভিমতবিরুদ্ধে, নায়েব গোমস্তাগণের দ্বারায় হয়। মফঃসলেও অনেক সুশিক্ষিত জমীদার আছেন, র্তাহাদিগেরও প্ৰায় ঐ রূপ। বড় বড় জমীদারদিগের অত্যাচার তত অধিক নহে ;-অনেক বড় বড় ঘরে অত্যাচার একবারে নাই। সামান্য সামান্য ঘরেই অত্যাচার অধিক । যাহার জমীদারী হইতে লক্ষ টাকা আইসে-অধৰ্ম্মাচরণ করিয়া প্ৰজাদিগের নিকট আর ২৫ হাজার টাকা লইবার জন্য র্তাহার মনে প্ৰবৃত্তি দুর্বল হইবারই সম্ভাবনা, কিন্তু যাহার