পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৯).pdf/২৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&Gw विदिक्ष अवक-विजैग्र डांश অতএব উপায়ান্তর অবলম্বন করিতে হয়। উপায়ান্তর দুইটি মাত্র। এক উপায় দেশীয় লোকের কিয়দংশের দেশান্তরে গমন। কোন দেশে লোকের অন্নে কুলায় না, অন্য দেশে অন্ন খাইবার লোক নাই। প্রথমোক্ত দেশের লোক কতক শেষোক্ত দেশে যাউক।--তাহা হইলে প্রথমোক্ত দেশের লোকসংখ্যা কমিবে, এবং শেষোক্ত দেশেরও কোন অনিষ্ট ঘটিবে না। এইরূপে ইংলণ্ডের মহাদুপকার হইয়াছে। ইংলণ্ডের লোক আমেরিকা, অস্ত্রেলিয়া এবং পৃথিবীর অন্যান্য ভাগে বাস করিয়াছে। তাহাতে ইংলণ্ডের শ্ৰীবৃদ্ধি হইয়াছে, উপনিবেশসকলেরও মঙ্গল হইয়াছে। দ্বিতীয় উপায়, বিবাহপ্রবৃত্তির দমন । এইটি প্ৰধান উপায়। যদি সকলেই বিবাহ করে, তবে প্ৰজাবৃদ্ধির সীমা থাকে না। কিন্তু যদি কতক লোক অবিবাহিত থাকে, তবে প্ৰজাবৃদ্ধির লাঘব হয়। যে দেশে জীবনের স্বচ্ছন্দ লোকের অভ্যস্ত, যেখানে জীবিকানির্বাহের সামগ্ৰী প্রচুর পরিমাণে আবশ্যক, এবং কষ্টে আহরণীয়, সেখানকার লোকে বিবাহপ্রবৃত্তি দমন করে। পরিবার প্রতিপালনের উপায় না দেখিলে বিবাহ 23 न । ভারতবর্ষে এই দুইটির একটি উপায়ও অবলম্বিত হইতে পারে নাই। উষ্ণতা শরীরের শৈথিল্যজনক, পরিশ্রমে অপ্ৰবৃত্ত্বিদায়ক। দেশান্তরে গমন উৎসাহ, উদ্যোগ, এবং পরিশ্রমের কাজ। বিশেষ, প্ৰকৃতিও তাহার প্রতিকূলতাচরণ করিয়াছেন। ভারতবর্ষকে অলঙ্ঘ্য পর্বত, এবং বাতাসস্কুল সমুদ্রমধ্যস্থ করিয়া বন্ধ করিয়া রাখিয়াছেন। যবদ্বীপ, এবং বালি উপদ্বীপ ভিন্ন আর কোন হিন্দু উপনিবেশের কথা শুনা যায় না। ভারতবর্ষের ন্যায় বৃহৎ এবং প্ৰাচীন দেশের.এইরূপ সামান্য ঔপনিবেশিক ক্রিয়া গণনীয় নহে । বিবাহপ্রবৃত্তির দমন বিষয়ে ভারতবর্ষের আরও মন্দাবস্থা। মাটি আঁচড়াইলেই শস্য জন্মে, তাহার যৎকিঞ্চিৎ ভোজন করিলেই শরীরের উপকার হউক, না হউক, ক্ষুধানিবৃত্তি এবং জীবনধারণ হয়। বায়ুর উষ্ণতাপ্রযুক্ত পরিচ্ছদের বাহুল্যের আবশ্যকতা নাই। সুতরাং অপকৃষ্ট জীবিকা অতি সুলভ। এমত অবস্থায় পরিবার প্রতিপালনে অক্ষমতাভয়ে কেহ ভীত নহে। সুতরাং বিবাহপ্রবৃত্তিদমনে প্ৰজা পরাস্মুখ হইল। প্ৰজাবৃদ্ধির নিবারণের কোন উপায়ই অবলম্বিত না হওয়াতে তাহার বেগ অপ্ৰতিহত হইল। কাজে কাজেই সভ্যতার প্রথম আভু্যদয়ের পরেই ভারতীয় শ্ৰমোপজীবীর দুৰ্দশা আরম্ভ হইল। যে ভূমির উর্বরতা ও বায়ুর উষ্ণতাত্নহতুক সভ্যতার উদয়, তাহাতেই জনসাধারণের দুরবস্থার কারণ সৃষ্টি হইল। উভয়ই অলঙ্ঘ্য নৈসৰ্গিক নিয়মের ফল।