পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৯).pdf/৪১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

စtfချွဲ၊fခဲဇွဲ 8e বাল্যলীলায় তাহা দেখাইলেন ; এবং তদুভয়ে যে সম্বন্ধবিচ্ছেদ, জীবের মুক্তির জন্য কামনীয়, তাহাও দেখাইলেন। সাংখ্যের মতে ইহাদিগের মিলনই জীবের দুঃখের্গমূল-তাই কবি এই মিলনকে অস্বাভাবিক এবং অপবিত্র করিয়া সাজাইলেন। वैभडाक्षरहउं शू তাৎপৰ্য্য, আত্মার ইতিহাস-প্ৰথমে প্ৰকৃতির সহিত সংযোগ, পরে বিয়োগ, পরে মুক্তি। জয়দেবপ্রণীত তৃতীয় কৃষ্ণচরিত্রে এই রূপক একেবারে অদৃশ্য। তখন আৰ্য্যজাতির জাতীয় জীবন দুর্বল হইয়া আসিয়াছে। রাজকীয় জীবন নিবিয়াছে-ধর্মের বাৰ্দ্ধক্য আসিয়ু উপস্থিত হইয়াছে। উগ্ৰতেজস্বী, রাজনীতিবিশারদ আৰ্য্যবীরেরা বিলাসপ্রিয় এবং ইন্দ্ৰিয়পরায়ণ হইয়াছেন। তীক্ষ্ণবুদ্ধি মাজ্জিতচিত্ত দার্শনিকের স্থানে অপরিণামদর্শী স্মাৰ্ত্ত এবং গৃহসুখবিমুগ্ধ কবি অবতীর্ণ হইয়াছেন। ভারত দুৰ্বল, নিশ্চেষ্ট, নিদ্রায় উন্মুখ, ভোগপরায়ণ। অস্ত্রের ঝঞ্চনার স্থানে রাজপুরীসকলে নূপুরনিক্কণ বাজিতেছে-বাহা এবং আভ্যন্তরিক জগতের নিগৃঢ় তত্ত্বের আলোচনার পরিবর্ভে কামিনীগণের ভাবভঙ্গীর নিগৃঢ় তত্ত্বের আলোচনার ধূম পড়িয়া গিয়াছে। জয়দেব গোস্বামী এই সময়ের সামাজিক অবতার ; গীতগোবিন্দ এই সমাজের উক্তি। অতএব গীতগোবিন্দের শ্ৰীকৃষ্ণ কেবল বিলাসরসে রসিক কিশোর নায়ক। সেই কিশোর নায়কের মূৰ্ত্তি অপূর্ব মোহন মূৰ্ত্তি ; শব্দভাণ্ডারে যত সুকুমার কুসুম আছে, সকলগুলি বাছিয়া বাছিয়া চতুর গোস্বামী এই কিশোর কিশোরী রচিয়াছেন ; আদিরসের ভাণ্ডারে যতগুলি মিথোজ্জল রত্ন আছে, সকলগুলিতে ইহা সাজাইয়াছেন ; কিন্তু যে মহাগৌরবের জ্যোতিঃ মহাভারতে ও ভাগবতে কৃষ্ণচরিত্রের উপর নিঃসৃত হইয়াছিল, এখানে তাহ অন্তহিত হইয়াছে। ইন্দ্ৰিয়পরতার অন্ধকার ছায়া আসিয়া প্রখর সুখতৃষাতপ্ত আৰ্য্য পাঠককে শীতল করিতেছে। তার পর বঙ্গদেশ যবনহন্তে পতিত হইল। পথিক যেমন বনে রত্ব কুড়াইয়া পায়, যবন সেইরূপ বঙ্গরাজ্য অনায়াসে কুড়াইয়া লইল। প্ৰথমে নামমাত্র বঙ্গ দিল্পীর অধীন ছিল, পরে যবনশাসিত বঙ্গরাজ্য সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন হইল। আবার বঙ্গদেশের কপালে ছিল যে, জাতীয় জীবন কিঞ্চিৎ পুনরুদ্দীপ্ত হইবে। সেই পুনরুদ্দীপ্ত জীবনবলে, বঙ্গভূমে রঘুনাথ ও চৈতন্যদেব অবতীর্ণ হইলেন। বিদ্যাপতি র্তাহাদিগের পূর্বগামী, পুনরুদ্দীপ্ত জাতীয় জীবনের প্রথম শিখা। তিনি জয়দেবপ্ৰণীত চিত্ৰখানি তুলিয়া লইলেন—তাহাতে নূতন রঙ্গ ঢালিলেন। জয়দেব অপেক্ষা বিদ্যাপতির দৃষ্টি তেজস্বিনী-তিনি শ্ৰীকৃষ্ণকে কিশোরবয়স্ক বিলাসরত নায়কই দেখিলেন বটে, কিন্তু জয়দেব কেবল বাহু প্ৰকৃতি দেখিয়াছিলেন-বিদ্যাপতি অন্তঃপ্রকৃতি পৰ্য্যন্ত দেখিলেন । যাহা জয়দেবের চক্ষে কেবল ভোগাতৃষা বলিয়া প্ৰকটিত হইয়াছিল-বিদ্যাপতি তাহাতে অন্তঃপ্রকৃতির সম্বন্ধ দেখিলেন। জয়দেবের সময় সুখভোগের কাল, সমাজের দুঃখ ছিল না। বিদ্যাপতির সময় দুঃখের সময়। ধৰ্ম্ম লুপ্ত, বিধাৰ্ম্মিগণ প্রত্ন, জাতীয় জীবন শিথিল, সবে মাত্র পুনরুদ্দীপ্ত হইতেছে-কবির চক্ষু ফুটিল। কবি, সেই দুঃখে, দুঃখ দেখিয়া, দুঃখের গান গাইলেন। আমরা বিদ্যাপতি ও জয়দেবে প্রভেদ সবিত্ত্বারে দেখাইয়াছি; সেই সকল কথায় পুনরুক্তির প্রয়োজন নাই। এস্থলে কেবল ইহাই