পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৯).pdf/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bや বিবিধ প্ৰবন্ধ সম্যক প্রকারে ক্ষুক্তিপ্রাপ্ত হয়। ইহা মনুষ্যলোকে সুশিক্ষার বীজ-কাব্যের প্রধান উপকরণ। দেসন্দিমোনার অদৃষ্টদোষে বা গুণে সে সকল মনোবৃত্তি ফুৰ্ত্তিপ্ৰাপ্ত হইবার অবস্থা তাহার ঘটিয়াছিল, শকুন্তলারও তাঁহাই ঘটিয়াছিল। অতএব দুই চরিত্র যে পরস্পর তুলনীয় হইবে, ইহার সকল আয়োজন আছে। এবং দুইজনে তুলনীয়া—কেন না, উভয়েই পরম স্নেহশালিনী—উভয়েই সতী। স্নেহশালিনী এবং সতী ত যে সে। আজকাল রাম, শ্যাম, নিধু বিধু যাদু, মাধু যে সকল নাটক উপন্যাস নিবন্যাস প্ৰেত্যন্যাম লিখিতেছেন, তাহার নায়িকামাত্রেই স্নেহশালিনী সতী । কিন্তু এই সকল সতীদিগের কাছে একটা পোষা বিড়াল আসিলে, র্তাহারা স্বামীকে ভুলিয়া যান, আর পতিচিন্তামগ্ন শকুন্তলা দুৰ্ব্বাসার ভয়ঙ্কর “অয়মহস্তোঃ” শুনিতে পান নাই! সকলেই সতী, কিন্তু জগৎসংসারে অসতী নাই বলিয়া, স্ত্রীলোকে অসতী হইতেই পারে না। বলিয়া দেসন্দিমোনার যে দৃঢ় বিশ্বাস, তাহার মৰ্ম্মের ভিতর কে প্ৰবেশ করিবে ? যদি স্বামীর প্রতি অবিচলিত ভক্তি-প্ৰহারে, অত্যাচারে, বিসর্জনে, কলঙ্কেও যে ভক্তি অবিচলিত, তাহাই যদি সতীত্ব হয়, তবে শকুন্তলা অপেক্ষা দেসন্দিমোনা গরীয়সী। স্বামিকর্তৃক পরিত্যক্ত হইলে শকুন্তলা দলিতফণা সৰ্পের ন্যায় মস্তক উন্নত করিয়া স্বামীকে ভৎসনা করিয়াছিলেন। যখন রাজা শকুন্তলাকে অশিক্ষা সত্ত্বেও চতুৰ্য্যপটু বলিয়া উপহাস করিলেন, তখন শকুন্তলা ক্ৰোধে, দম্ভে, পূর্বের বিনীত, লজ্জিত, দুঃখিত ভােব পরিত্যাগ করিয়া কহিলেন, “অনাৰ্য্য, আপনার হৃদয়ের ভাবে সকলকে দেখ ?” যখন তদুত্তরে রাজা, রাজার মত, বলিলেন, “ভদ্রে। দুষ্মন্তের চরিত্র সবাই জানে,” তখন শকুন্তলা ঘোর ব্যঙ্গে বলিলেন, BDD SB BDDD BDDD DBBB BDDBDSS লজ্জাবিণিজিদাও জাণিন্তি ণ কিম্পি মহিলাও ৷ এ রাগ অভিমান, এ ব্যঙ্গ দেসন্দিমোনায় নাই। যখন ওথেলো দেসন্দিমোনাকে সর্বসমক্ষে প্রহার করিয়া দূৰীভূত করিলেন, তখন দেসন্দিমোনা কেবল বলিলেন, “আমি দাড়াইয়া আপনাকে আর বিরক্ত করিব না।” বলিয়া যাইতেছিলেন, আবার ডাকিতেই “প্ৰভু!” বলিয়া নিকটে আসিলেন। যখন ওথেলো অকৃতাপরাধে তঁহাকে কুলটা বলিয়া অপমানের একশেষ করিয়াছিলেন, তখনও দেসন্দিমোনা “আমি নিরপরাধিনী, ঈশ্বর জানেন,” ঈদৃশ উক্তি ভিন্ন আর কিছুই বলেন নাই। তাহার পরেও পতিস্নেহে বঞ্চিত হইয়া, পৃথিবী শূন্য দেখিয়া, ইয়াগোকে ডাকিয়া বলিয়াছেন,