পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৫৯).pdf/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় পরিচ্ছেদ ဘွof§ অতি প্রাচীন কাল হইতে দর্শনশাস্ত্রের উদ্দেশ্য, জগতের আদি কি, তাহা নিরাপিত হয়। আধুনিক ইউরোপীয় দার্শনিকেরা সে তত্ত্ব নিরূপণীয় নহে বলিয়া এক প্রকার ত্যাগ করিয়াছেন । জগতের আদি সম্বন্ধে প্ৰথম প্রশ্ন এই যে, জগৎ সৃষ্ট, কি নিত্য । অনাদিকাল এই রূপ আছে, না কেহ তাহার সর্জন করিয়াছেন ? অধিকাংশ লোকের মত এই যে, জগৎ সৃষ্ট, জগৎকৰ্ত্তী একজন আছেন । সামান্য ঘট পটাদি একটি কীৰ্ত্তা ব্যতীত হয় না ; তবে এই অসীম জগতের কৰ্ত্তা নাই, ইহা কি সম্ভবে ? তার এক সম্প্রদায়ের লোক আছেন ; তঁাহারা বলেন যে, এই জগৎ যে সৃষ্ট বা ইহার কেত কৰ্ত্তা আছেন, তাহা বিবেচনা করিবাবি কারণ নাই। ঈহাদের সচরাচর নাস্তিক বলে ; কিন্তু নাস্তিক বলিলেই মৃঢ় বুঝায় না। র্তাহারা বিচারের দ্বারা তাপন পক্ষ সমর্থনা করিতে চেষ্টা করেন। সেই বিচার অত্যন্ত দুরূহ, এবং এ স্থলে তাহার পরিচয় দিবার কোন প্ৰয়োজন নাই । তবে একটি কথা মনে রাখিতে হইবে সে, ঈশ্বরের অস্তিত্ব একটি পৃথক তত্ত্ব, সৃষ্টিপ্রক্রিয়া আর একটি পৃথক তত্ত্ব। ঈশ্বরবাদীও বুলিতে পারেন যে, “আমি ঈশ্বর মানি, কিন্তু সৃষ্টিক্ৰিয়া মানি না । ঈশ্বর জগতের নিয়ন্তা, তাহার কৃত নিয়ম দেখিতেছি, নিয়মাতিরিক্ত সৃষ্টির কথা আমি বলিতে পারি না ।” এক্ষণকার কোন কোন গ্ৰীষ্টীয়ান এই মতাবলম্বী । ইহার মধ্যে কোন মত অযথার্থ, কোন মত যথার্থ, তাঙ্গা আমরা কিছুই বলিতেছি না। যাহার যাহা বিশ্বাস, তদ্বিরুদ্ধ আমাদের কিছুই বক্তব্য নাই। আমাদের বলিবার কেবল এই উদ্দেশ্য সে, সাংখাকারকে প্ৰায় এই মতাবলম্বী বলিয়া বোধ হয় । সাংখ্যকার ঈশ্বরের অস্তিত্ব মানেন না, তাহা পশ্চাৎ বলিব। কিন্তু তিনি “সর্ববিৎ সর্বকৰ্ত্তা” পুরুষ মানেন, এইরূপ পুরুষ মানিয়াও তঁহাকে সৃষ্টিকৰ্ত্তা বলেন না ; সৃষ্টিই মানেন না। এই জগৎ প্রাকৃতিক ক্রিয়ামাত্র বলিয়া স্বীকার করেন । (ক)র কারণ, (খ) ; (খ)র কারণ (গ) ; (গ)র কারণ, (ঘ) ; এইরূপ কারণ পরম্পরা অনুসন্ধান করিতে করিতে অবশ্য এক স্থানে অন্ত পাওয়া যাইবে , কেন না, কারণশ্রেণী কখন অনন্ত হইতে পারে না। আমি যে ফলটি ভোজন করিতেছি, ইহা অমুক বৃক্ষে