পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৫৯).pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SS8 दिक्षि & আর একবার এই প্রশ্ন উত্থাপিত হইয়াছিল। যখন ধৰ্ম্মশান্ত্রের অত্যাচারে পীড়িত হইয়া ভারতবর্ষ ত্ৰাহি ত্ৰাহি করিয়া ডাকিতেছিল, তখন শাক্যসিংহ বুদ্ধদেব বলিয়াছিলেন, “তোমরা বেদ মানিবে কেন ? বেদ মানিও না।” এই কথা শুনিয়া বেদবিৎ, বেদভক্ত, দার্শনিকমণ্ডলী এই প্রশ্নের উত্তর দিয়াছিলেন । জৈমিনি, বাদ রায়ণ, গৌতম, কণাদ, কপিল, যাহার যেমন ধারণা, তিনি তেমনি উত্তর দিয়াছিলেন । অতএব প্ৰাচীন দর্শনশাস্ত্রে এই প্রশ্নের উত্তর থাকাতে দুইটি কথা জানা যাইতেছে ; প্ৰথম, আজি কালি ইংরেজি শিক্ষার দোষেই লোকে বেদের অলঙ্ঘনীয়তার প্রতি নূতন সন্দেহ করিতেছে, এমত নহে। এ সন্দেহ অনেক দিন হইতে । প্রাচীন দার্শনিকদিগের পরে শঙ্করাচাৰ্য্য, মাধবাচাৰ্য্য, সায়নাচাৰ্য্য প্রভৃতি নব্যেরাও ঐ প্রশ্নের উত্তর দিবার জন্য ব্যস্ত হইয়াছিলেন। দ্বিতীয়, দেখা যায় যে, এ প্রশ্ন বৌদ্ধের প্রথম উত্থাপিত করেন, এবং প্রাচীন দার্শনিকের প্রথম তাহার উত্তর দান করেন। অতএব বৌদ্ধধৰ্ম্ম ও দর্শনশাস্ত্রের উৎপত্তি সমকালিক বলা যাইতে পারে । বেদ মানিব কেন ? এই প্রশ্নের বিচারসমরে মহারথী মীমাংসক জৈমিনি । তাহার প্রতিদ্বন্দী নৈয়ায়িক গৌতম । নৈয়ায়িকেরা বেদ মানেন না, এমত নহে । কিন্তু যে সকল কারণে মীমাংসকেরা বেদ মানেন, নৈয়ায়িকের। তাহা অগ্ৰাহ করেন । মীমাংসকেরা বলেন, বেদ নিত্য এবং আপৌরুষেয় । নৈয়ায়িকেরা বলেন, বেদ অ্যাপ্তবাক্য মাত্র । নৈয়ায়িকের মীমাংসকের মত খণ্ডন জন্য যে সকল আপত্তি উত্থাপন করিয়াছেন, মাধবাচাৰ্য্য-প্ৰণীত সৰ্ব্বদর্শনসংগ্ৰহ হইতে তাহার সারমর্ম নিম্নে সংক্ষেপে লেখা গেল । মীমাংসকেরা বলেন যে, সম্প্রদায়াবিচ্ছেদে বেদ কৰ্ত্তা আসূৰ্য্যমান। সকল কথা লোকপরম্পরা স্মৃত হইয়া আসিতেছে, কিন্তু কাহারও স্মরণ নাই যে, কেহ বেদ করিয়াছেন । ইহাতে নৈয়ায়িকেরা। আপত্তি করেন যে, প্ৰলয়কালে সম্প্রদায় বিচ্ছিন্ন হইয়াছিল । এক্ষণে যে বেদ প্রণয়ন স্মরণে নাই, ইহাতে এমত প্রমাণ হইতেছে না যে, প্রলয়পুর্বে বেদ প্ৰণীত হয় নাই । আর ইহাও তোমরা প্ৰমাণ করিতে পরিবে না যে, বেদকৰ্ত্ত কাহা কর্তৃক কখন স্মৃত ছিলেন না । নৈয়ায়িকের আরও বলেন যে, বেদবাক্যসকল, যেমন কালিদাসাদিবাক্য, তেমনি বাক্য, অতএব বেদবাক্যও পৌরুষেয় বাক্য । বাক্যত্বহেতু, মম্বাদির বাক্যের ন্যায়, বেদবাক্যকেও পৌরুষেয় বলিতে হইবে। আর মীমাংসকেরা বলিয়া থাকেন যে, যেই বেদাধ্যয়ন করে, তাহার পূর্বে তাহার গুরু অধ্যয়ন করিয়াছিলেন, র্তাহার পূর্বে র্তাহার গুরু অধ্যয়ন করিয়াছিলেন, তঁহার পূর্বে র্তাহার গুরু ; এইরূপ যেখানে অনন্ত পারম্পৰ্য্য আছে, সেখানে বেদ অনাদি । নৈয়ায়িক বলেন যে, মহাভারতাদি সম্বন্ধেও ঐরাপ বলা যাইতে পারে। যদি বল যে, মহাভারতের কৰ্ত্তা যে ব্যাস, ইহা স্মৰ্য্যমান, তবে বেদ সম্বন্ধেও বলা যাইতে পারে যে, “ঋচঃ সামানি যজ্ঞিরে । ছন্দাংসি