প্ৰাচীন এবং নবীনা SG (6 করিতেন, তাহারা একটু সতর্ক হইয়া দূরে দাড়াইতেন। ইহারা কোন্দলে বিশেষ পরিপক ছিলেন, পরস্পরের পৃষ্ঠত্বকের সঙ্গে তঁহাদের হস্তের সম্মার্জনীর বিশেষ কোন সম্বন্ধ ছিল। র্তাহাদিগের ভাষাও যে বিশেষ প্রকারে অভিধানসম্মত ছিল, এমত বলিতে পারি না ; কেন না, তাহারা “পোড়ারমুখো”। “ডোকরা” ইত্যাদি নিপাতনসাধ্য শব্দ আধুনিক প্ৰাণনাথ প্ৰাণকান্তাদির স্থলে ব্যবহার করিতেন, এবং “আব্বাগী” “শতেক খুয়ারী” প্রভৃতি শব্দ আধুনিক “সখী” “ভগিনী” স্থানে প্রয়োগ করিতেন। এক্ষণে যে সুন্দরীকুল চরণালীক্তকে বঙ্গভূমিকে উজ্জলা করিতেছেন, তাহারা ভিন্নপ্রকৃতি । সে শাখা শাড়ী সিন্দূর মিশি মল মাদুলী, কিছুই নাই ; অনভিধানিক প্ৰিয় সম্বোধনীসকল সুন্দরীগণের রসনা ত্যাগ করিয়া বাঙ্গলা নাটকে আশ্রয় লইয়াছে ; যেখানে আগে মোটা মনসাপেড়ে শাড়ী মেয়ে মোড়া গনিক্লাথ ছিল, এক্ষণে তাহার স্থানে শান্তিপুরে ডুরে, রূপের জাহাজের পাল হইয়া সোহাগ-বাতাসে ফরফর করিয়া উড়িতেছে। হাত বেড়ী বঁটা কলসীর পরিবৰ্ত্তে, সূচি সূতা কর্পেট কেতাব হইয়াছে; পরিধেয় আটু ছাড়িয়া চরণে নামিয়াছে ; কবরী মূৰ্দ্ধা ছাড়িয়া স্বন্ধে পড়িয়াছে ; এবং অঙ্গের সুবৰ্ণ পিণ্ডত্ব ছাড়িয়া অলঙ্কারে পরিণত হইতেছে । ধূলিকদমরঙ্গিনীগণ সাবান সুগন্ধাদির . মহিমা বুঝিয়াছেন ; কলকণ্ঠ ধ্বনি পাপিয়ার মত গগন প্লাবী না তইয়া মার্জারের মত অস্ফুট হইয়াছে। পতির নাম এক্ষণে আল ডেকরা সৰ্ব্বনেশে নহে ; তত্তৎস্থানে সম্বোধনপদসকল দীনবন্ধুবাবুর গ্ৰন্থ হইতে দাছিয়াব ছিয়া নীত হইয়া ব্যবহৃত হইতেছে। স্থূল কথা এই, প্ৰাচীনার অপেক্ষা নবীনার রুচি কিছু ভাল । স্ত্রীজাতির রুচির কিছু সংস্কার হইয়াছে। কিন্তু অন্যান্য বিষযে তােদৃশ উন্নতি হইয়াছে কি না, বলিতে পারি না। কয়েকটি বিষয়ে নবীনগণকে আমরা নিন্দনীয়া বিবেচনা করি । তাহাদিগের কোন প্ৰকার নিন্দা করা আমাদিগের ঘোরতর ঘেআদবি। তবে চন্দ্রের সঙ্গে তঁহাদিগের সাদৃশ্য সম্পূর্ণ করিবার জন্য তঁহাদিগের কিঞ্চিৎ কলঙ্ক রটনায় প্ৰবৃত্ত হইলাম । ১ । তঁহাদের প্রথম দোষ আলস্য। প্রাচীন অত্যন্ত শ্রমশালিনী এবং গৃহকৰ্ম্মে সুপটু ছিলেন ; নবীন ঘোরতব বাবু ; জলের উপর পদ্মের মত স্থিরভাবে বসিয়া, স্বচ্ছ দর্পণে আপনার রূপের ছায়া। আপনি দেখিয়া দিন কাটান । গৃহকৰ্ম্মের ভার, প্ৰায় পরিচারিকার প্রতি সমাপিত । ইহাতে অনেক অনিষ্ট জন্মিতেছে ;-প্ৰথম, শারীরিক পরিশ্রমের অল্পতায় যুবতীগণের শরীর বালশূন্য এবং রোগের আগার হইয়া উঠিতেছে। প্রাচীনাদিগের, অর্থাৎ পূর্বকালের যুবতীগণের শরীর স্বাস্থ্যজনিত এক অপূর্ব লাবণ্যবিশিষ্ট ছিল, এক্ষণে তাহা কেবল নিম্নশ্রেণীর স্ত্রীলোকের মধ্যে দেখা যায়। নবীনাদিগের প্রাত্যহিক রোগভোগে তাহাদিগের স্বামী পিতা পুত্ৰ প্ৰভৃতি সৰ্ব্বদা জ্বালাতন এবং