পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৫৯).pdf/১৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গেীরদাস বাবাজির ভিক্ষার বুলি Sr. আমি চেষ্টা করিলাম-পারিলাম না । সে কথা স্বীকার করিলাম। বাবাজি বলিলেন, “যাহারা সেরাপ চিন্তা করিতে শিখিয়াছে, তাহারা পারে। কিন্তু তার জন্য জ্ঞানের প্রয়োজন । কিন্তু যাহার জ্ঞান নাই, সে কি উপাসনা হইতে বিরত হইবে ? তাহা উচিত নহে। যাহার জ্ঞান নাই, সে যেরূপে রুদ্রকে চিন্তা করিতে পারে, সেরূপ করিয়া উপাসনা করিবে । এ সব স্থলে রূপ কল্পনা করিয়া চিন্তা করা, সহজ উপায়। তুমি যদি এমন একটা মূৰ্ত্তি কল্পনা কর যে, তদ্দ্বারা সংহারকারিতার আদর্শ বুঝায়, তবে তাহাকে রুদ্রের মুক্তি বলিতে পার । তাই রুদ্রের কালভৈরব রূপ কল্পনা । নচেৎ রাদ্রের কোন রূপ নাই। আমি । এ ত বুঝিলাম। কিন্তু যেমন আমার শক্তি আমাতেই আছে, রুদ্রের শক্তি অর্থাৎ রুদ্রাণী রুদ্রেই আছে। শিব দুর্গা পৃথক পৃথক করিয়া গড়িয়া পূজা করে কেন ? বাবা জি.। তোমাকে ভাবিলেই তোমার শক্তি জানিলাম না । অগ্নিতে যে কখন হাত দেয় নাই, সে অগ্নি দেখিলেই বুঝিতে পারে না সে, অগ্নিতে হাত পুড়িয়া যাইবে। পাঁজা পুড়িতেছে দেখিয়া, যে আর কখন অগ্নি দেখে নাই, সে বুঝিতে পারে না যে, আগুনের আলো করিবার শক্তি আছে। অতএব শক্তি এবং শক্তির আলোচনা পৃথক করিয়া না করিলে শক্তিকে বুঝিতে পরিবে না । রুদ্র ও নিরাকার, রুদ্রের শক্তিও নিরাকার । যে অজ্ঞান এবং নিরাকারের স্বরূপচিন্তায় অক্ষম, তাহাকে উপাসনার্থ উভয়েরই রূপ-কল্পনা করিতে হয় । আমি । কিন্তু বৈষ্ণব বিষ্ণুরই উপাসনা করিয়া থাকে, রুদের উপাসনা করে না । অতএব রুদ্রাণীর প্রসাদ ভোজন আপনার পক্ষে অকৰ্ত্তব্য । বাবাজি । বিষ্ণু আমাকে যে উদর দিয়াছেন, রুদ্রাণীর প্রসাদে যে তাহা পূরিবে না, এমন আদেশ কিছু করেন নাই। কিন্তু সে কথা থাক। রুদ্রাণী বিষ্ণুরই শক্তি । আমি । সে কি ? রুদ্রাণী ত রুদ্রের শক্তি ? বাবাজি । বিষ্ণুই 卒JT1 আমি। এ সব অতি অশ্রদ্ধেয় কথা। ব্ৰহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বব বা রুদ্র, তিন জন পৃথক। একজন স্মৃষ্টি করেন, একজন পালন করেন, একজন লয় করেন। তবে বিষ্ণু রুদ্র হইলেন কি প্রকারে ? বাবাজি । যে বাবুর বাড়ী বসিয়া আমি ভোজন করিতেছি, ইনি করেন কি জান ? আমি । জানি । ইনি জমিদারি করেন । বাবাজি । আর কিছু করেন না ?