পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৫৯).pdf/৩৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भश्शुद्ध दिक्ल ? \SბსტSX উদ্দেশ্য হওয়া উচিত বটে। কিন্তু প্ৰথমতঃ সেই সকল কাৰ্য্য কি, তদ্বিষয়ে মতভেদ, নিশ্চয়তার একেবারে উপায়াভাব ; দ্বিতীয়তঃ, পরলোকের অস্তিত্বেরই প্ৰমাণাভাব । তৃতীয়তঃ, পরলোক থাকিলে, এবং ইহলোক পরীক্ষাভূমিমাত্র হইলেও ঐহিক এবং পারিত্রিক শুভের মধ্যে ভিন্নত হইবার কোন কারণ দেখা যায় না। যদি পরলোক থাকে, তবে যে ব্যবহারে পরলোকে শুভ নিম্পত্তির সম্ভাবনা, সেই কাৰ্য্যেই ইহলোকেও শুভ নিম্পত্তির সম্ভাবনা কেন নহে, তাহার যথার্থ হেতুনিৰ্দেশ এ পৰ্য্যন্ত কেহ করিতে পারে নাই। ধৰ্ম্মাচরণ যদি মঙ্গলপ্রদ হয়, তবে যে উহা কেবল পরলোকে মঙ্গলপ্রদ, ইহলোকে মঙ্গলপ্রদ নহে, এ কথা কিসে সপ্ৰমাণীকৃত হইতেছে ? ঈশ্বর স্বৰ্গে বসিয়া কাজির মত বিচার করিতেছেন, পাপীকে নরককুণ্ডে ফেলিয়া দিতেছেন, পুণ্যাত্মাকে স্বর্গে পাঠাইয়া দিতেছেন, এ সকল প্রাচীন মনোরঞ্জন উপন্যাসকে প্রমাণ বলিয়া গ্ৰহণ করা যাইতে পারে না । যাহারা বলেন যে, ইহলোকে অধ্যাম্মিকের শুভ, এবং ধাৰ্ম্মিকের অশুভ দেখা গিয়া থাকে, তাহাদিগের চক্ষে কেবল ধনসম্পদাদিই শুভ। তঁহাদিগের বিচার এই মূল ভ্ৰান্তিতে দূষিত। যদি পুণ্যকৰ্ম্ম পরকালে শুভাপ্রদ হয়, তবে ইহলোকেও পুণ্যকৰ্ম্ম শুভপ্ৰদ । কিন্তু বাস্তবিক কেবল পুণ্যকৰ্ম্ম কি পরলোকে, কি ইহলোকে শুভপ্ৰদ হইতে পারে না। যে প্রকার মনোবৃত্তির ফল পুণ্যকৰ্ম্ম, তাহাই উভয় লোকে শুভপ্ৰদ হওয়াই সম্ভব। কেহ যদি কেবল মাজিষ্ট্রেট সাহেবের তাড়নার বশীভূত হইয়া, অথবা যশোর লালসায় অপ্ৰসন্নচিত্তে দুভিক্ষনিবারণের জন্য লক্ষ মুদ্রা দান করে, তবে তাহার পারলৌকিক মঙ্গলসঞ্চয় হইল কি ? দান পুণ্যকৰ্ম্ম বটে, কিন্তু এরূপ দানে পরলোকের কোন উপকার হইবে, ইহা কেহই বলিবে না । কিন্তু যে অর্থাভাবে দান করিতে পারিল না, কিন্তু দান করিতে পারিল না বলিয়া কাতর, সে ইহলোকে, এবং পরলোক থাকিলে পরলোকে, সুখী হওয়া সম্ভব । অতএব মনোবৃত্তিসকল যে অবস্থায় পরিণত হইলে পুণ্যকৰ্ম্ম তাহার স্বাভাবিক ফলস্বরূপ স্বতঃ নিম্পাদিত হইতে থাকে, পরলোক থাকিলে, তাহাই পরলোকে শুভদায়ক বলিলে, সে কথা গ্ৰাহ করা যাইতে পারে। পরলোক থাকুক বা না থাকুক, ইহলোকে তাহাই মনুষ্যজীবনের উদ্দেশ্য বটে। কিন্তু কেবল তাহাই মনুষ্যজীবনের উদ্দেশ্য হইতে পারে না । যেমন কতকগুলি মানসিক বৃত্তির চেষ্টা কৰ্ম্ম, এবং যেমন সে সকলগুলি সম্যক মাজ্জিত ও উন্নত হইলে, স্বভাবত পুণ্যকৰ্ম্মের অনুষ্ঠানে প্রবৃত্তি জন্মে, তেমনি আর কতকগুলি বৃত্তি আছে, তাহাদের উদ্দেশ্য কোন প্রকার। কাৰ্য্য নহে--জ্ঞানই তাহাদিগের ক্রিয়া । কাৰ্য্যকারিণী বৃত্তিগুলির অনুশীলন যেমন মনুষ্যজীবনের উদ্দেশ্য, জ্ঞানার্জনী বৃত্তিগুলিরও সেইরূপ অনুশীলন জীবনের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত । বস্তুতঃ সকল