পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আচাৰ্য্য কেশবচন্দ্র ও বাংলার নবযুগ به سط অদ্বৈত-তত্ত্ব ও নানা তান্ত্রিক সাধন-পদ্ধতি সেই আৰ্য্যধৰ্ম্মকে হিন্দুধৰ্ম্মে রূপান্তরিত করিয়াছে। ব্ৰহ্মতত্ত্বের সহিত বিশুদ্ধ ভক্তিধৰ্ম্ম মিলিত হইয়া নানা সম্প্রদায়ের—নানা তন্ত্রের স্বষ্টি করিয়াছে বটে, কিন্তু অদ্বৈতব্রহ্মবাদের ছায়া মৃদুরপ্রসারিত হইয়া, ধৰ্ম্মকে শেষ পৰ্য্যন্ত সুস্পষ্ট সামাজিক প্রয়োজনের ক্ষেত্র হইতে সরাইয়া, ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক প্রয়োজন-সাধনেই বিশেষ করিয়া নিয়োজিত রাখিয়াছে। এই অত্যুচ্চ আধ্যাত্মিক আদর্শের প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া যে সমাজবিধি প্রস্তুত হইয়াছিল, তাহা সেকালের জনসমাজের কৗদৃশ কল্যাণ কি ভাবে সাধন করিয়াছিল তাহা বলা কঠিন—আজিকার আদর্শে তাঙ্গ নির্ণয় করাও বোধ হয় সঙ্গত হইবে না। কিন্তু পরবর্তী কালে এই অধ্যাত্মসাধন ও সামাজিক হিতসাধনের মধ্যে সামঞ্জস্যের অভাব ছিল, তাহাতে সংশয় নাই । অপেক্ষাকৃত আধুনিক কালে, এই বাংলা দেশেই, প্রায় পাচ শত বৎসর পূৰ্ব্বে, যে নবধৰ্ম্মের অভু্যদয় হইয়াছিল তাহাতেও এ সমস্তার সম্যক মীমাংসা হয় নাই । নিয়ম-ধৰ্ম্মের পরিবর্তে, ধৰ্ম্মমূলক ভক্তিরসের প্লাবনে, জাতির প্রকৃতি আরও কোমল হইয়া পড়িয়াছিল, সমাজ আত্মস্থ না হইয়া কতকটা আত্মহারা হইয়াছিল। সমগ্র মুসলমান-অধিকারকালে, আত্মোন্নতি অপেক্ষ আত্মরক্ষার চেষ্টাই প্রবল হইতে দেখা যায় ; সেকালে এই আত্মরক্ষার উপায় হইয়াছিল আত্মসঙ্কোচ । এই জন্যই চৈতন্যপ্রবর্তিত ভক্তি-ধৰ্ম্ম সামাজিক সংস্কার ও সংগঠন-কৰ্ম্মে দুঃসাহসী হইতে পারে নাই । অতএব দেখা যাইতেছে, ধৰ্ম্মের যে আর এক আদর্শ আছে, লোকসংস্থিতিই যাহার মুখ্য অভিপ্রায়—যে ধৰ্ম্ম-নীতি ব্যবহারিক লোকযাত্রাকে নিয়ন্ত্রিত করিতে পারে, তাহা আমাদের দেশে বহুদিন প্রচারিত