পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

brb." বিবিধ কথা হয় নাই। আমরা ধৰ্ম্ম বলিতে ব্যক্তিগত মোক্ষসাধনার আদর্শই বুঝি ; এই মোক্ষলাভের সাধনায় ব্যক্তির অধিকারভেদ মানি । প্রত্যেক জীবই কৰ্ম্ম অনুসারে অন্য হইতে স্বতন্ত্র, অতএব সাধন-মন্ত্ৰ সকলের পক্ষে এক হইতে পারে না। মানুষমাত্রেই এক ধৰ্ম্ম-পরিবারভুক্ত বটে, কিন্তু তুল্যাধিকারসম্পন্ন নয় ; একই গোষ্ঠীপতি ভগবানের সন্তান বলিয়া সকলেই একই সত্যের অধিকারী—এ ধারণা আমাদের নিকট নিতান্তই হাস্যকর । অধিকারভেদে একই সত্যের নানা রূপ—কোনটাই মিথ্যা নহে ; মানসিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতিহিসাবে যাহার যতটুকু অধিকার তাহাই তাহার পরম সত্য । এই তত্ত্বের আধ্যাত্মিক মৰ্ম্ম যতই গভীর হউক—এ আদর্শের মূলে যত গভীর সত্যই নিহিত থাক, ইহার ফলে যে সমাজ-ব্যবস্থার উদ্ভব হইয়াছে, তাহাতে সামাজিক নীতি-সত্যের সম্যক মর্যাদা রক্ষিত হয় নাই। যতদিন বাহিরের সঙ্গে সংঘাত গুরুতর হইয়া উঠে নাই—অহিন্দু সেমীয় সভ্যতার সহিত সংঘর্ষ ঘটে নাই, ততদিন এই বাস্তব-স্পদ্ধ অধ্যাত্ম-সাধনা কতকটা নিৰ্ব্বিঘ্ৰেই চলিয়াছিল। কিন্তু পরে, বিধৰ্ম্মের প্রচণ্ড আঘাতে, বিজাতির প্রবলতর রাষ্ট্ৰীয় শক্তির উৎপাতে, যখন এ জাতির দুর্বলতা প্রকাশ পাইল, তখন এই ধৰ্ম্ম বাহিরের জীবন ও সামাজিক নীতি-সত্যকে পাশ কাটাইয়া গুহ তান্ত্রিক সাধনমার্গে আত্মগোপন করিল ; যে ধৰ্ম্ম সমাজকে ধরিয়া রাখে তাহার প্রতি উদাসীন হইয়া—আমরা জীবনে মিথ্যাচারী, এবং ধৰ্ম্মসাধনায় আধ্যাত্মিক হইয়া উঠিলাম । ইহার পর যাহা ঘটিল তাহা সকলেই জানেন । উনবিংশ শতাব্দীর আরম্ভ হইতেই আমরা নিজেদের দুর্গতি সম্বন্ধে ক্রমশ সচেতন হইয়া উঠিলাম—যে সঙ্কট সম্বন্ধে এতদিন আমাদের কোনও চৈতন্যই ছিল না,