পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আচাৰ্য্য কেশবচন্দ্র ও বাংলাপ নবযুগ ఏ4 উদ্বুদ্ধ হইয়াছিল তাহ আজ বিশেষ করিয়া স্মরণ রাখিতে হইবে। আমার মনে হয়, পাশ্চাত্য ধৰ্ম্মশাস্ত্র নয়, ইংরেজী সাহিত্যও নয়, ইংরেজের যে চরিত্রবল—বিজেতা জাতির যে পৌরুষময় প্রাণের ফুৰ্ত্তি সেকালে সমগ্র ভারতবাসীকে মুগ্ধবিস্ময়ে অভিভূত করিয়াছিল—যাহার প্রভাবে ইংরেজ শুধুই রাজ্যজয় করে নাই, বহু শতাব্দীর অনাচারকলুষিত নৈতিক দুর্দশাগ্রস্ত জাতির হৃদয়ে আধিপত্য স্থাপন করিয়াছিল—সে যুগের বাঙালী মনীষী ও বাঙালী ভাবুক তাহাকেই বরণ করিয়া, আত্মসাৎ করিয়া, জাতির জীবনে নব আদর্শরূপে স্থাপন করিতে চাহিয়াছিলেন। কেশব এদেশে ইংরেজ-অধিকারের ইতিহাস জানিতেন ; তাহার কারণও যেমন বুঝিয়াছিলেন, তেমনই তাহার স্বফললাভের আশাও করিয়াছিলেন। তিনি বিশ্বাস করিয়াছিলেন, ইহা অপ্রত্যাশিত ও আকস্মিক বলিয়াই, ইহার মূলে মঙ্গলময় বিধাতার শুভ অভিপ্রায় আছে। যে ধর্থনীতির প্রেরণায় ইংরেজ জাতি বড় হইয়াছে—ইংরেজের দৃষ্টাস্তে ও সাহচর্য্যে তাহারই সারতত্ত্ব আমাদের জীবনে গ্রহণ করিতে পারিলেই আমাদের পরিত্রাণ আশু ও সহজ হইবে । ইংরেজের ভারত-বিজয়ের ফলে জাতির একটা মহৎ কল্যাণ সাধিত হইবে—এমন ধারণা সেকালে সকল শিক্ষিত বাঙালীর ছিল, বাঙালী একটা বড় আশা করিয়াছিল। বঙ্কিমচন্দ্রও এ আশা করিতেন । ইংরেজের প্রতি এই শ্রদ্ধা, বিজাতির প্রতি এই মনোভাব— ভাবনা ও কল্পনাশক্তির ফলে বাঙালীই সৰ্ব্বাগ্রে পোষণ করিয়াছিল ; ইহারই ফলে, পাশ্চাত্য শিক্ষাদীক্ষার প্রভারে বাঙালীই আধুনিক ভারতে যুগান্তর আনিয়াছে। কেশবের মধ্যে সেই বাঙালিয়ানারই বিকাশ হইয়াছিল ধৰ্ম্ম-প্রেরণার দিক দিয়া । কেশবের ধৰ্ম্ম-প্রেরণার মূলে ছিল পাপ-বোধ। অতি অল্প বয়সেই