পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আচাৰ্য্য কেশবচন্দ্র ও বাংলার নবযুগ X o X অপূৰ্ব্ব দ্বন্দ্ৰ—ইহাই নবযুগের বাঙালীর নবস্বষ্টি-কামনার অবস্থা ; ইহাই এ জাতির প্রতিভার নিদান। ইহা আৰ্য্যও নয়, সেমিটিকও নয়, ইহা বাঙালীর শোণিত ও বাংলার জলমাটির বিশিষ্ট গুণ। ইহারই বলে আমরা নবযুগের নূতন কালচার স্বষ্টি করিয়াছি—রাষ্ট্রে, সমাজে ও সাহিত্যে, বিষম আদর্শের মিলন ঘটাইয়া, সমগ্র ভারতের ইতিহাসে নৃতন অধ্যায় যোজনা করিয়াছি। কেশবচন্দ্রে সেই সংস্কৃতিশীলতার এক অপূৰ্ব্ব বিকাশ লক্ষিত হয়। ভাবুকতাপ্রবণ বাঙালীর নিকটে কোনও ভাবসত্যই বর্জনীয় নহে। বাঙালীর নবজাগ্রত উচ্ছ স্থল আবেগ কেশবের সত্যপিপাসা ও বলিষ্ঠ ধৰ্ম্মচেতনায় সংহত ও সংযত হইয়া জাতীয় জাগরণের একটা দিক নির্ণয় করিয়া দিল । আমার মনে হয়, কেশবচরিত্রের এই দিকটি বাঙালী জাতির নবজাগৃতির ইতিহাসে বিশেষ করিয়া অনুধাবনযোগ্য। আমার বক্তব্য শেষ হইয়া আসিয়াছে, তথাপি উপসংহারে আরও কয়েকটি কথা বলিব । সমগ্র উনবিংশ শতাব্দী ধরিয়া বাঙালী আর কোনও চিন্তা করে নাই—নূতন যুগের নূতন অবস্থার সঙ্গে, নৈতিক, মানসিক, সামাজিক ও রাষ্ট্ৰীয় সামঞ্জস্য সাধনই, তাহার সকল কৰ্ম্ম-চিন্তা, সকল ভাবুকতার মূলে ছিল। জাতির অধঃপতনও যেমন গভীর, পরিত্রাণের আদর্শও তেমন উচ্চ । উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম পাদে রামমোহনের মনীষা সেই সমস্যাকে প্রথম প্রত্যক্ষ করিয়াছিল, ইহাই রামমোহনের কৃতিত্ব। কিন্তু আমাদের বুদ্ধির জড়তা প্রদর্শন, যুক্তিবিচারের প্রয়োজনীয়তা প্রতিপাদন ছাড়া তিনি অধিক কিছু করিতে পারেন নাই। কেবল যুক্তিবিচারসিদ্ধ মতবাদের দ্বারাই একটা জাতির হৃদয় বা চরিত্রের পরিবর্তন হয় না—চাই প্রেম, চাই তপস্যা ; জীবনে