পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉oく বিবিধ কথা তাহারই অগ্নি প্রজলিত করিয়া সেই আলোক মানুষের প্রাণে ও মনে বিকীর্ণ করা। কেশব দ্বিতীয় যুগের যুগন্ধর ; তিনি নবজীবন স্বষ্টির কাজে আত্মোৎসর্গ করিয়াছিলেন–তিনি সে যুগের প্রথম প্রেমিক। কিন্তু কেশবের প্রেমও জাতীয় জীবন-যজ্ঞে পূর্ণাহুতির সিদ্ধিলাভ করিল না। ধৰ্ম্ম-প্রচারক কেশবচন্দ্রের মন্ত্র জাতীয় জাগরণের প্রথম প্রহরেই নিস্তেজ হইয়া পড়িল । কেশব নিজেও শেষে সকল বিধি, সকল বিধান উত্তীর্ণ হইয়া, নিজের প্রচার-ধৰ্ম্ম ও ধৰ্ম্ম-প্রচারেরও বহু উৰ্দ্ধে প্রয়াণ করিয়াছিলেন । তথাপি ইহা স্বীকার করিতে হইবে, জাতীয় জীবনযজ্ঞে প্রথম অগ্ন্যাধান করিয়াছিলেন কেশব। র্তাহার প্রচার-কৰ্ম্মের অপূৰ্ব্ব উন্মাদন, নূতন ভাবচিস্তাকে বাহিরের আচার-অনুষ্ঠানে রূপ দিবার আশ্চৰ্য্য স্বজনীশক্তি, এবং সৰ্ব্বোপরি র্তাহার ব্যক্তিত্ব—কেশববিরোধী সম্প্রদায়কেও অনুপ্রাণিত করিয়াছে ; তাহার কৰ্ম্মপদ্ধতি কত কৰ্ম্মীকে পথ দেখাইয়াছে। সে যুগের যে বাঙালী কবি মহাকাব্য রচনা করিয়া যশস্বী হইয়াছিলেন, আমার মনে হয় তিনিও কেশবীয় ভাবের ভাবুক । “এক ধৰ্ম্ম, এক জাতি, এক ভগবান”—এই মহাবাক্য প্রচারকল্পে, যিনি নূতন করিয়া, বাঙালীর জন্য মহাকাব্য রচনা করিতে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন—সেই কবি নবীনচন্দ্রও কেশবের বাণী হইতেই প্রেরণা লাভ করিয়াছিলেন বলিয়া মনে হয়। আরও মনে হয়, কেশবের অব্যবহিত পরবর্তী কালে যে আর এক মহাপুরুষ এই জাতির জীবন-যজ্ঞে শেষ আহুতি দিয়াছিলেন, সেই বীর-সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দও, তাহার প্রচারপ্রণালী ও কৰ্ম্মপদ্ধতিতে কেশবের দ্বারা প্রভাবিত হইয়াছিলেন । যে অগ্নিমস্ত্রে দীক্ষণর কথা কেশব র্তাহার ‘জীবন-বেদে উল্লেখ করিয়াছেন, ভাবের সেই উৎসাহ, কৰ্ম্মোন্মাদনার সেই উত্তাপ বিবেকানন্দের জীবনেও অপরিমিত ।