শ্রীরামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ × o (* মহিমা ঘোষণা করিলেন। শঙ্করের অদ্বৈত-আত্মতত্ত্বের আস্তিকতা বৌদ্ধ শূন্তবাদ নিরসন করিলেও, মানুষের প্রাণ সেই উত্ত,স্ব তুষারশিখরবিচ্ছুরিত শীতল জ্যোতির আশ্বাসে আশ্বস্ত হইতে পারে নাই। এই ভাগবত ধৰ্ম্মেরই নানা মন্ত্র মানুষের দুঃখনিবৃত্তির সাধনোপায় হইয়াছিল। তথাপি এক দিকে জ্ঞান ও অপর দিকে প্রেম, এই দুইয়ের দ্বন্দ্ব চিরকাল মানুষের অধ্যাত্মচেতনায় জাগিয়া রহিল। মাত্র একবার ভারতীয় হিন্দু-প্রতিভার উৎকৃষ্ট-নিদর্শন-স্বরূপ গীতোক্ত কৰ্ম্মসন্ন্যাসবাদে এই দ্বন্দ্ব সমাধানের এক অপূৰ্ব্ব পন্থা উকি দিয়াছিল—বুদ্ধপ্রচারিত ধর্থনীতির এক নূতন অর্থবাদ হইতেই এই কৰ্ম্মসন্ন্যাস-মন্ত্রের উদ্ভব হইয়াছিল বলিয়া মনে হয় । কিন্তু তথাপি সমস্যার মূল যেন দৃষ্টির বাহিরেই রহিয়া গেল। খ্রষ্টের ভক্তি-ধৰ্ম্ম, বৈষ্ণবের জ্ঞানভক্তিবাদ—দ্বৈত এবং বিশিষ্টাদ্বৈত— কিছুতেই মানুষের মনুষ্যত্ব-বোধ পরিতৃপ্ত হয় নাই ; যুগবিশেষের যুগধৰ্ম্মরূপে এই সকল উপদেশ যতই কাৰ্য্যকরী হউক, যুগান্তরের ক্ৰমবৰ্দ্ধমান মানবীয় চৈতন্তে যে আধ্যাত্মিক সঙ্কট ঘনীভূত হইয়া উঠিতেছে, মানুষের দেহমন যে তীব্রতর চেতনায় অশাস্ত হইয়া উঠিতেছে, Wixso: &–“Render unto Caesar what is Caeser's due”–এই নীতি অনুযায়ী সংসারের সঙ্গে তেমন সহজ বোঝাপড়া আর সম্ভব নহে । আধ্যাত্মিক সঙ্কট অপেক্ষ আধিভৌতিক সঙ্কটই এখন মানুষকে এমন কোণঠেসা করিয়াছে যে, ইহকালই তাহার সর্বস্ব হইয়। উঠিয়াছে ; অথচ তাহাতেও বাচিবার আশা নাই। আজ যে ভগবৎ-মুখী হইয়া বসিয়া থাকে, সে হয় ক্লাব, নয় অন্ধ। মধ্যযুগের আদর্শ আজ অচল। অথচ ধৰ্ম্মহীন হইলে মানুষ বাচিবে না। তবে উপায় ?
