পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

× თbz বিবিধ কথা আবশ্বকতা রাখেন নাই,—কারণ সেই নাম বস্তু হইতে পৃথক নয়, ভগবান ঐ জীবের মধ্যেই আছেন । এই জীবে দয়া'র কথা বলিতে বলিতে একবার তিনি সমাধিস্থ হইয়। পরে সমাধিভঙ্গে মৃদুস্বরে বলিয়াছিলেন—“জীবে দয়া ?—দয়া?—বলিতে লজ্জা হয় না? তুমি কীটাৰু-কীট! তুমি দয়া করিবার কে ? না! না! দয়া অসম্ভব। জীবকে দয়া নয়—শিবরূপে সেবা কর।” আমার মনে হয়, ইহাই শ্রীরামকৃষ্ণপ্রচারিত নব ধৰ্ম্মের সার-সত্য। মানুষকেই নব মহিমায় প্রতিষ্ঠিত করা,—পাপবোধ হইতে মুক্ত করিয়া তাহার ভিতরে যে পরম বস্তু রহিয়াছে তাহারই সহিত পরিচয়সাধন করাইয়া, ক্ষুদ্র ‘আমিকে ব্যষ্টিদেহ হইতে উদ্ধার করিয়া বিরাট সমষ্টিদেহে স্পন্দিত করিয়া তোলা—ইহাই এই নব অবতারের অবতারত্বের হেতু। জীব ও ব্রহ্মের অভেদ-তত্ত্ব এমন করিয়া আর কেহ প্রচার করেন নাই। পরমহংসদেবের ‘কালী’ এই জীব হইতে শিবে, এবং শিব হইতে জীবে গতায়তির সেতু। জ্ঞানের অদ্বৈতসিদ্ধির শেষে, সচ্চিদানন্দকে আত্মসাং করিবারও পরে, যে-প্রেম মহাপুরুষেরই মোহরূপে মুক্তি অপেক্ষাও গরীয়ান—বৈষ্ণব নয়, পূরা অদ্বৈতীর পক্ষেই স্বষ্টির যে রসরূপ আস্বাদন করা সম্ভব—কালী তাহারই প্রতীক। যে প্রেম অদ্বৈতকে অক্ষুণ্ণ রাখিয়াই, বহুর মধ্যে একের উপলব্ধি, বন্ধনের মধ্যেই মুক্তি, শিবরূপে জীবের পূজা সম্ভব করিয়া তোলে—এ সেই প্রেম। জগতের আর কোনও প্রেমিক এমন প্রেমু প্রচার করেন নাই।