পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-পরিচয় ১৬৭ রচনা করেন নাই—সমাজতত্ত্ব লিখিয়াছেন ; এজন্য যাহারা Karl Marx 's Bertrand Russell, Bernard Shaw 3 Aldous Huxley-4 নামাঙ্কিত শীলমোহরের ছাপ দিয়া শরৎ-সাহিত্যের মূল্য নিরূপণ করেন, তাহারা শরৎচন্দ্রকে বাদ দিয়াই তাহার রচনা পাঠ করিয়া থাকেন । কিন্তু আমার বক্তব্য ইহাও নহে ; বর্তমান প্রসঙ্গে আমি এই একটি কথাই বলিতে চাই যে, আধুনিক যুগসঙ্কটের ছায়ায় গত যুগের বাঙালী-সমাজের একটি প্রাণগত পরিচয় শরৎ-সাহিত্যে ফুটিয়া উঠিয়াছে, শরৎচন্দ্র প্রাণে মনে সেই গত যুগেরই বংশধর; র্তাহার রচিত সাহিত্যে আমরা একটা বিলীয়মান যুগের বাঙালী সভ্যতা, বাঙালী সমাজ এবং সেই সমাজের শক্তি ও অশক্তির যে মৰ্ম্মাস্তিক লিপিচিত্র পাইয়াছি, তাহাই বাংলা সাহিত্যে অমর হইয়া থাকিবে । সাহিত্যিকের অস্তজীবনের উপর বাহিরের জীবনযাত্রার প্রভাব যে আছে, তাহা আমরা জানি ; কিন্তু সেই প্রভাব যে কত বেশি হইতে পারে, শরৎচন্দ্রের সাহিত্যিক-জীবনের শেষভাগে তাহার স্পষ্ট পরিচয় আমরা পাইয়াছি। শরৎচন্দ্র কখনও পুথিবিদ্যা, তত্ত্ব ও মতবাদের—এক কথায় পাণ্ডিত্যজীবী—মানুষ ছিলেন না ; তাহার সাহিত্যিক প্রতিভার উন্মেষ ও পরিপূর্ণ বিকাশ হইয়াছিল—আমি যাহাকে বলিয়াছি তান্ত্রিক সাধনা, জীবনেরই ঘাটে বাটে, প্রাস্তরে শ্মশানে, সেইরূপ প্রত্যক্ষ পরিচয়ের সাধনায়। কিন্তু শরৎচন্দ্রের মন তাহাতে তৃপ্ত থাকিতে পারে নাই, নিজের অনুভূতিশক্তির ঐকাস্তিকতার জন্যই, তিনি যেন তাহার বিপরীত সাধনার প্রতি অতিশয় ভক্তিমান ছিলেন । এইজন্য যখন র্তাহার জীবনযাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে, জীবন হইতে পুথির জগতে প্রবেশ করিবার সুযোগ বাড়িল, তখন হইতেই তাহার স্বকীয় সাধনার আসন