পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ጏፃ8 বিবিধ কথা কবি-হিসাবে রবীন্দ্রনাথের কীৰ্ত্তি ইহার কোন ভাগে অধিকতর সার্থক হইয়াছে, এবং কেন হইয়াছে,—কোন ভাগে তাহার ব্যক্তিমানসের সুস্পষ্ট পরিচয় পাওয়া যায়, সেই সম্বন্ধে সংক্ষেপে কিছু বলিব। যে একটি বস্তু রবীন্দ্রনাথের কবিজীবনকে এমন অনন্যসাধারণ বৈশিষ্ট্য দান করিয়াছে, আমি তাহার নাম দিব—আনন্দ-মুক্তির প্রেরণা। রবীন্দ্রনাথ সারা জীবন ধরিয়া যে গান গাহিয়াছেন, সেই গানের স্বরই তাহার প্রাণের স্বর—এই স্থর একান্তই তাহার নিজের । এই গানের স্বরেই সেই আনন্দ-মুক্তির আকুল আগ্রহ বরাবর একভাবে প্রকাশ পাইয়াছে। র্তাহার জীবনের শ্রেষ্ঠ সাধনা এই গানেই আরম্ভ, গানেই শেষ । এক হিসাবে এই গানগুলির কথা ও স্বর তাহার প্রতিভার সর্বশ্রেষ্ঠ নিদর্শন। এই গানের মধ্যেই কবিজীবনের আদ্যন্ত স্বপরিস্ফুটন্ধপে প্রকাশ পাইয়াছে। কবিপ্রাণের আদি-প্রেরণা ও তাহার বিকাশের অখণ্ড ধারা যদি কোথায়ও থাকে, তবে এই গানগুলির ভিতরেই তাহ। ব্যাপ্ত হইয়া আছে। রবির উদয়কালে যে বর্ণচ্ছটা পূৰ্ব্বাকাশ রঞ্জিত করিয়াছিল, এখনও সেই নানা বর্ণের গীত-গরিমায় অস্ত-গগন ভরিয়া উঠিয়াছে। প্রভাতে মধ্যাহ্নে ও অপরাহ্লে রবির প্রতিভা উদ্ধাকাশের সেই নীল শূন্ত ত্যাগ করিয়া পৃথিবীপৃষ্ঠে অবতরণ করিয়াছিল, এবং আপন আলোকে পৃথিবীর রূপ, রঙ, রেখাকে উজ্জল করিয়াছিল। ইহাই ছিল কবির কাব্যসাধনী—ইহা গীত-সাধনা নয়। আমি যে পূৰ্ব্বাদ্ধ ভাগের কথা বলিয়াছি, তাহাই কবি রবীন্দ্রের কাব্যস্থষ্টির যুগ। রবীন্দ্রনাথের গীতি-প্রকৃতিকে যদি তাহার কবিপ্রকৃতি হইতে পৃথক করিয়া দেখা সম্ভব হয়, তবেই রবীন্দ্রনাথের কবিজীবনের আদ্যন্ত বুঝিবার পক্ষে বাধা ঘটিবে না, এবং সেই জীবনের পরিচ্ছেদগুলি বিভক্তভাবেই