পাতা:বিবিধ কথা.djvu/২৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२९० বিবিধ কথা শাসন যেন পরধর্মের মতই তাহার স্বাভাবিক ফুৰ্ত্তি রোধ করিয়াছিল। বৈষ্ণবের সেই নর-প্রীতি, সেই পুরাতন অধ্যাত্মবাদ ও তত্ত্বজিজ্ঞাসায় জটিল হইয়া উঠিল । জাতিনির্বিশেষে বৈষ্ণবমাত্রেই পূজনীয় হইলেও, ব্রাহ্মণ-শাসিত সমাজে এই বৈষ্ণবপূজাও ব্রাহ্মণপূজার রূপান্তর হইয়। উঠিয়াছে ; এবং এই প্রেমধৰ্ম্মের ফলে একটা দাস-মনোভাব সমস্ত জাতিকে আচ্ছন্ন করিয়াছে। তাই, এই রেনেসাসের মধ্যে বাঙালীর বাঙালীত্বের কতখানি উন্মেষ হইয়াছিল, এই নব-জাগরণ তাহার জীবনকে কতখানি জয়যুক্ত করিয়াছিল তাহ ভাবিয়া দেখিলে, ইহার অন্তরালেও একটা বিপুল ব্যর্থতার প্রমাণ মিলিবে । মনে হয়, এই জাতি যেন আত্মপ্রকাশ করিয়াও করিতে পারে নাই, নানা বিরুদ্ধ শক্তির তাড়নায় সে পরিশেষে বীৰ্য্যহীন হইয়া পড়িয়াছে—নানা জঞ্জাল ও আবর্জনায় তাহার জীবনস্রোত রুদ্ধ হইয়া সমাজে, সাহিত্যে ও ধৰ্ম্মে কতকগুলি পহুলের স্বষ্টি করিয়াছে। কিন্তু এ কথাও সত্য যে, ঐতিহাসিক কালের মধ্যে বাঙালী সেই একবার জাগিয়াছিল, এবং সেই একযুগের অর্জিত ভাব-সম্পদ ও সাধনার বলে সে আরও তিন চার শত বৎসর পার হইয়া আসিয়াছে। ইতিমধ্যে এক দিকে মুসলমান শাসনের ফলে সমাজে যে নূতন ধরনের aristocracy-র অভু্যদয় হইয়াছে, এবং অপর দিকে গুরু-ব্রাহ্মণের যে পূজা ক্রমশ স্বপ্রতিষ্ঠিত হইয়াছে—এক দিকে রাজপূজা ও অপর দিকে ভূদেবতার সম্মান, এই উভয়বিধ সংস্কারের চাপে বাঙালীর ভাবস্বাধীনতা লোপ পাইয়াছে, পূর্ণ আত্মবিস্মৃতি ঘটিয়াছে। জাতিহিসাবে সে তখন কান্তকুজাগত ব্রাহ্মণ ও কায়স্থের বংশধর,—সমুদ্রে বিন্দুবৎ যাহার। মিশিয়া গিয়াছিল, তাহাদের সেই আৰ্য্য-রক্তের গৌরব গুরু-ব্রাহ্মণ ও