পাতা:বিবিধ কথা.djvu/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>8 বিবিধ কথা জয় করিবার উদ্যম করিয়াছিলাম। এই যে নবধৰ্ম্মের প্রেরণা, ইহার মুলে ছিল—প্রেম ; আত্মদানের মহাব্ৰতই এই নবধৰ্ম্মসাধনার নামান্তর। মানুষকে ভালবাসিতে হইবে, কিন্তু আপাতত তাহার সাধন-ক্ষেত্র এই দেশ ও এই সমাজ । এ সাধনার প্রথম সোপান—চিত্তশুদ্ধি ; তজ্জন্য নিজ জাতি ও নিজ সমাজের কল্যাণকে একান্তভাবে বরণ করিতে হইবে ; তাহাতে জাতি বাচিবে, এবং সঙ্গে সঙ্গে তোমারও আত্মার সদগতি লাভ হইবে। জাতির সেবা করিতে হইলে—তাহার পাপ, তাহার অজ্ঞান, তাহার সকল দুৰ্গতি ও লাঞ্ছনা আপনার সর্ব অঙ্গে বহন করিতে হইবে ; পতিতের পাতিত্যকে ঘৃণা করিলে চলিবে না, সেই পাতিত্যকে নিজেরই পাতিত্য মনে করিয়া অধীর হইতে হুইবে । এই প্রেম বিবেকানন্দেরও ছিল। বঙ্কিমচন্দ্রের প্রেম-কল্পনা দেশমাতৃকার একটি মহনীয় মূৰ্ত্তির ধ্যান ও তাহারই দেশকালসন্মত বিগ্রহ রচনা করিয়াছিল ; তিনি সেই মূৰ্ত্তির প্রতি ভক্তি উদ্রেক করিয়া পদুকে গিরিলঙ্ঘন করাইতে চাহিয়াছিলেন। বিবেকানন্দের প্রেম জ্ঞানমূলক, বঙ্কিমের ভক্তিমূলক ; বঙ্কিমচন্দ্র এ জাতির মৰ্ম্মের কথা জানিতেন । কিন্তু এই ধর্মের সাধনপথে শীঘ্রই বিঘ্ন উপস্থিত হইল। প্রথমত, জাতি মানুষ হইয়া উঠিবার পূর্বেই রাজনৈতিক সংগ্রামে মাতিয়া উঠিল । যাহারা অস্তরে জ্ঞান ও শক্তি লাভ করে নাই, নিঃস্বার্থ জনসেবার দ্বারা যাহাদের চিত্তশুদ্ধি হয় নাই—তাহাদের পক্ষে এই রাজনৈতিক আন্দোলন পরধৰ্ম্মের মতই ভয়াবহ । আগে সমাজ, পরে রাষ্ট—অন্তত জাতির শিক্ষা ও সমাজ কিয়ং পরিমাণে উন্নত না হইলে, রাজনীতির আলেয়া যে তাহাকে দিকৃভ্রান্ত করিবেই, তাহা বঙ্কিমচন্দ্র ও বিবেকানন্দ উভয়েই জানিতেন ; এজন্য র্তাহারা এ বিষয়ে বার বার