পাতা:বিবিধ কথা.djvu/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२२ বিবিধ কথা উন্নত মনোবৃত্তির প্রভাবে মানুষের এই স্বভাবধৰ্ম্ম যেমন সজ্ঞান ও স্বক্ষ হইয়া উঠিয়াছে, তেমনই ব্যক্তি ও সমাজ এই উভয়ের স্বার্থ যতই পরস্পরবিরোধী হইয়া উঠিয়াছে, ততই যাহা এককালে স্বতঃস্ফূৰ্ত্ত জৈব প্রবৃত্তি ছিল, তাহাই ক্রমশ স্বার্থসম্বরণমূলক ত্যাগধৰ্ম্মে পৰ্য্যবসিত হইয়াছে। এই আদিম সত্যনিষ্ঠার মধ্যে কোনও তত্ত্ব-জিজ্ঞাসা ছিল না ; যাহা জানি বলিব, যাহা বলিব তাহা করিব—ইহা যেমন সহজ তেমনই স্বাভাবিক ছিল ; সে সমাজে স্বতঃস্ফূৰ্ত্ত প্রাণ-ধৰ্ম্মের বিরুদ্ধে কোনরূপ চিন্তার বাধা ছিল না। কিন্তু যখনই সেই বাধা বৃদ্ধি পাইতে লাগিল, তখনই এই সত্যভাষণ ও সত্যাচরণ আর সহজ বা স্বাভাবিক রহিল নু ; ইহার জন্য আত্মনিগ্ৰহ, এমন কি আত্মবিসর্জন করারও প্রয়োজন হইল। সেজন্য এক দিকে যেমন ইহার মূল্য বাড়িয়া গেল, তেমনই আর এক দিকে ইহার অর্থ কমিয়া গেল। স্বভাব বা স্বাস্থ্যের জন্যই ছিল যাহার প্রয়োজন, তাহাই একটা নৈতিক আদর্শ-নিষ্ঠায় পরিণত হইল ; অর্থাৎ, তাহার দ্বারা কোনও প্রত্যক্ষ কল্যাণ সাধিত না হইলেও—এমন কি অনিষ্ট ঘটিলেও, একটা ব্যক্তিগত কৃচ্ছসাধন বা আত্মনিগ্রহের মহিমাই ইহার একমাত্র অর্থ হইয়া দাড়াইল, একটা নৈতিক অহংজ্ঞানই মুখ্য কারণ হইয়া উঠিল। অতঃপর এই সত্য-সাধনের মধ্যে মানুষের মনের একটা সূক্ষ্ম অহংকার জড়িত হইয়া গেল—মানুষ আপনার মধ্যে বিবেক নামক যে বস্তুটির আবিষ্কার করিল, তাহা প্রকৃতপক্ষে তাহার নিজেরই উচ্চতর অহংকার। এইরূপে হৃদয়বৃত্তি অপেক্ষ মানসবৃত্তির প্রাধান্ত ঘটিল। কারণ, প্রেম এই ন্যায়-অন্যায়-বোধের বিরোধী—অন্যায় বা অসত্য যত বড়ই হোক, প্রেম তাহাকে ক্ষমা করে । কিন্তু যে ব্যক্তি মনে-প্রাণে