&b- বিবিধ কথা নহেন। অন্তত যতখানি জ্ঞান থাকিলে সে যুগের ইতিহাসে রামমোহনের স্থান বুদ্ধিবিচারসহকারে স্থির করিয়া লওয়া সম্ভব, সে জ্ঞান এই হুজুগকারীদের নাই। রামমোহনের ইহা সৌভাগ্য কি দুর্ভাগ্য জানি না ; কারণ, জাতির নিকটে যেটুকু শ্রদ্ধা ও সম্মান তাহার প্রাপ্য এই অত্যুক্তি ও অযথা-ভাষণের আপাতসাফল্যের পরিণাম সে পক্ষে স্ববিধাজনক নয়। রামমোহনকে এ-জাতি এ পর্য্যস্ত ভাল করিয়া চিনিবার স্বযোগ পায় নাই, এবারে এতবড় একটা উপলক্ষ্যেও সে স্বযোগ হইল না । এক শত বৎসর পূৰ্ব্বে, সেই যুগের প্রতিবেশ ও বিশিষ্ট আবহাওয়ার মধ্যে, রামমোহনের মত মনীষীর যে অসাধারণত্ব দৃষ্টিগোচর হয়, তাহা বিস্ময়কর বটে। কিন্তু সেই জন্যই তাহাকে ভাবী কালের দ্রষ্টা ও নিয়স্তা বলিয়া ঘোষণা করিলে কেবল রামমোহনকেই বিড়ম্বিত করা হয় না, এই কালের অন্যান্য যুগন্ধর পুরুষের প্রতি অবিচার করা হয় ; তাহাতে জাতিরও গৌরববৃদ্ধি হয় না। রামমোহন যদি মহাপুরুষ হইতেন, তাহার চরিত্রে যদি এমন কোনও আত্মিক শক্তি বা সৰ্ব্বাঙ্গীণ মানবীয় মহিমার প্রদীপ্তি প্রকাশ পাইত, তবে জাতির চিত্তশুদ্ধির উপায়স্বরূপ তাহার সেই দিব্য দৃষ্টান্ত সৰ্ব্বদা সম্মুখে রাখিবার প্রয়োজন থাকিত ; সকল মহাপুরুষই এই কারণে সৰ্ব্বকালের ও সমগ্র মানবগোষ্ঠীর পূজনীয় হইয়া থাকেন। রামমোহন সাধারণ মানুষের চেয়ে যত বড়ই হউন, একটা জাতির জীবনে একক গুরু বা আদি আদর্শরূপে তাহার স্থান হইতে পারে না। এই ভারতবর্ষে অতি পুরাকাল হইতে আজ পর্য্যস্ত বহু মহাপুরুষ, বহু প্রেমিক ত্যাগী কৰ্ম্মী ও মনীষীর আবির্ভাব হইয়াছে, এবং তাহাদের বাণী ও সাধনার ফল জাতির মৰ্ম্ম-স্থলে এখনও জাগ্রত হইয়া আছে। এই প্রাচীন জাতিকে
