পাতা:বিবিধ কথা.djvu/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬২ বিবিধ কথা লইয়। তাহারই আলোকে স্বধৰ্ম্মের পুনরুদ্ধার কামনা। যুক্তিবিচারকেই সে একমাত্র পন্থা বলিয়া স্বীকার করে নাই—মস্তিষ্কের সাহায্যে হঠাৎ প্রজ্জ্বলিত পরধর্মের আলোক তাহাকে আকৃষ্ট করিতে পারে নাই ; নিজ প্রাণের দীপশিখার সাহায্যে সেই দুৰ্গতির অন্ধকারে পথসন্ধান করিয়াছিল বলিয়াই সে আজ আত্মসম্মান ও আত্মপ্রত্যয়ের ভূমিতে একটা বিশিষ্ট সাধনাসম্পন্ন জাতিরূপে উঠিয়া দাড়াইতে সক্ষম হইয়াছে। গত শতাব্দীর ইতিহাসে বাঙালী জাতির এই সাধনা ও সিদ্ধির মূল সত্যটিকে অস্বীকার করিবার উপায় নাই। শতাব্দীর শেষ ভাগে এই প্রকৃত জাতীয় জাগরণের ফলে, একটি ক্ষুদ্র মণ্ডলীর মধ্যে আবদ্ধ আত্মঘাতী ও জাতিধৰ্ম্মবিরোধী আন্দোলন ক্রমে নিস্তেজ হইয়া পড়িল । এমন করিয়া বাঙালী যদি আপনাকে বাচাইবার চেষ্টা না করিত, তবে আজ এই বিংশ শতাব্দীর দারুণতর সঙ্কটে জাতিহিসাবে টিকিয়া থাকিবার আশাও আর থাকিত না । রামমোহনকে হিন্দুসমাজ কখনও ভাল করিয়া বুঝিবার চেষ্টা করে নাই, তাহার বাণী বিচার করিয়া দেখিবার প্রয়োজন বোধও করে নাই ; র্তাহার নাম ও র্তাহার রচিত গ্রন্থগুলি প্রবাদ মাত্রে পর্য্যবসিত হইয়া আছে । ইহা দুঃখের বিষয় সন্দেহ নাই ; কিন্তু ততোধিক হাস্যকর কথা এই যে, তথাপি গত যুগের জাতীয় জাগরণের মূলে রামমোহনের সেই বাণীর প্রভাব স্বীকার করাইতে র্তাহার ভক্তগণ বদ্ধপরিকর। রামমোহনের মহত্ত্ব প্রতিপাদনের জন্য যে সকল কাহিনী বা কিম্বদন্তী, অসম্পূর্ণ তথ্য ও অর্ধ-সত্য বার বার উত্থাপিত হইয়া থাকে, সেগুলি পরীক্ষা করিয়া দেখা আবশ্যক। আমি অতঃপর তাহারই কয়েকটির প্রতি শিক্ষিত সাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করিব।