পাতা:বিবিধ কথা.djvu/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१२ বিবিধ কথা রীতিবিকাশের ধারায় রামমোহনের গদ্য কুত্ৰাপি চিহ্নরূপেও বিদ্যমান নাই। মৃত্যুঞ্জয় উনবিংশ শতকের প্রারম্ভ হইতেই বাংলা গদ্যের চর্চা করিতেছিলেন ; কাল হিসাবেও তিনি রামমোহনের অগ্রবর্তী । রামমোহনের বাংলা রচনা ১৮১৪ খ্ৰীষ্টাব্দের পূৰ্ব্বে নহে। মৃত্যুঞ্জয়ের বত্রিশ সিংহাসন রচিত হয় ১৮০২ খ্ৰীষ্টাব্দে, এবং ‘প্রবোধচন্দ্রিকা’র তারিখ ১৮৩৩ খ্ৰীষ্টাব্দ। এই ‘প্রবোধচন্দ্রিকা’য় নানা গদ্যরীতির নমুনা আছে ; তন্মধ্যে একটি রীতি বিদ্যাসাগরের অব্যবহিত-পূর্ব বাংলা গদ্যের রূপ বলিয়া নির্দেশ করা যাইতে পারে । সকলেই জানেন, বাংলা গদ্যের প্রথম স্বসম্পন্ন রূপ বিদ্যাসাগরের ভাষা । অতএব জিজ্ঞাস্ত এই, বাংলা গদ্যরীতির গঠনে রামমোহনের স্থান কোথায় ? আমি এ বিষয়ে অধিক আলোচনা নিম্প্রয়োজন মনে করি, কারণ তথ্যের দিক দিয়া ইহা এতই অবিসংবাদিত যে, এ বিষয়ে কোনও তর্কের অবকাশ নাই । আরও প্রশ্ন এই—রামমোহন সাহিত্যিক ছিলেন কবে ? যাহার মনে প্রাণে কোথায়ও সাহিত্যের অভিপ্রায় বা প্রেরণা ছিল না, তিনি সাহিত্য রচনা করিতে যাইবেন কেন ? রামমোহন যে সকল গ্রন্থ লিখিয়াছিলেন, সেগুলির বিষয়-বস্তু ও রচনা-ভঙ্গি—তাহাদের content ও form—যাহাকে সাহিত্য বলে, তাহার ত্রিসীমানার বাহিরে। তাহার সে উদ্দেশুও ছিল না। এই ভাষা তাহারই ভাষা হইয়া আছে— তাহা গত যুগের বাঙালী সাহিত্যিকগণের কোনও উপকারে লাগে নাই ; তাহাদের কেহই সাহিত্যিক কৌতুহলের বশবর্তী হইয়া সেগুলির বিশেষ চর্চা করিয়াছিলেন বলিয়া মনে হয় না, অন্তত তাহার কোনও প্রমাণ নাই। রামমোহনের গ্রন্থগুলি লোপ পাইলে গত যুগের বাংলার