“দেখ, দেব, দেখ চেয়ে”, কাতরে কহিলা
কুরুরাজ কৃপাচার্য্যে,—“আসিছেন ধীরে
নিশীথিনী; নাহি তারা কবরী-বন্ধনে—
না শোভে ললাটদেশে চারু নিশামণি!
শিবির-বাহিরে মোরে লহ কৃপা করি,
মহারথ! রাখ লয়ে, যথায় ঝরিবে
এ ভূনত-শিরে এবে শিশিরের ধারা
ঝরে যথা শিশুশিরে অবিরল বহি
জননীর অশ্রুজল, কালগ্রাসে যাবে
সে শিশু।” লাইলা সবে ধরাধরি করি
শিবির-বাহিরে শূরে—ভগ্ন-ঊরু রণে!
মহাযত্নে কৃপাচার্য্য পাতিল ভূতলে
উত্তরী। বিষাদে হাসি কহিলা নৃমণি;—
“কার হেতু এ সুশয্যা, কৃপাচার্য্য রথি?
পড়িনু ভূতলে, প্রভু, মাতৃগর্ভ ত্যজি;—
সেই বাল্যাসন ভিন্ন কি আসন সাজে
অন্তিমে? উঠাও বস্ত্র, বসি হে ভূতলে।
কি শয্যায় সুপ্ত আজি কুরুবীর্য্যরূপী
গাঙ্গেয়? কোথায় গুরু দ্রোণাচার্য্য রথী,
কোথা অঙ্গপতি কর্ণ? আর রাজা যত
ক্ষত্র-ক্ষেত্র-পুষ্প, দেব! কি সাধে বসিবে
এ হেন শয্যায় হেথা দুর্য্যোধন আজি?
যথা বনমাঝে বহ্নি জ্বলি নিশাযোগে
আকর্ষি পতঙ্গচয়ে, ভস্মেন তা সবে
সর্ব্বভূক্—রাজদলে আহ্বানি এ রণে—
পাতা:বিবিধ কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত.pdf/৫২
অবয়ব
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
দুর্য্যোধনের মৃত্যু