পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (দ্বিতীয় খণ্ড) - গিরীন্দ্রকুমার সেন.pdf/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

У У о বিবিধ প্ৰবন্ধ । কার বাকপটু, চতুর, চটুল সন্ন্যাসী ফকিরের মত ভণ্ড ছিল কি না। সন্দেহ। অন্নচিন্তায় ব্যাকুল হইলে তাহদের ধৰ্ম্মচৰ্চায় ব্যাঘাত হইবে এবং তাহদের অনুকরণে দেশে ধৰ্ম্মপ্ৰাণ চিরপ্রতিষ্ঠিত থাকিবে, ভাবিয়া আমাদের পূর্বপুরুষগণ যে দানবিধি প্ৰবৰ্ত্তিত করিয়া গিয়াছেন, সে বিধির বশবৰ্ত্তী হইয়া আমরা যে সকল সন্ন্যাসী ফকিরকে কষ্টার্জিত অর্থের একাংশ প্ৰদান করি, তাহদের কয়জন ধৰ্ম্মচৰ্চা করে ? তাহদের বাহ্যু আড়ম্বর ও ভোক কত যে সরলচিত্তকে মোহিত করে, তাহার। আর ইয়ত্ত করা যায় না । যেদেশে “ন দেবায় ন ধৰ্ম্মায়’ অর্থব্যয় সমাজানুমোদিত নহে, সে দেশে দেবতার দোহাই দিয়া যে কত কপট ধাৰ্ম্মিক ও সেবায়েত প্ৰতারণা-সাহায্যে অপরের পরিশ্রমলব্ধ ধন অনায়াসে ভোগ করিতেছে, তাহার কথাইবা কি বলিব ? যে দেশে ভিখারীকে প্ৰত্যাখ্যান করিতে হইলে কতবার বিনীত হইতে হয়, কতবার মনে আশঙ্কা হয় বুঝিবা শাপ ভ্ৰষ্ট হই-যে দেশে পাপমুক্ত হইতে অথবা নিজ কল্যাণ সাধন করিতে কিছু না দিয়া বঞ্চিত করিতে সদাই আশঙ্কার উদয় হয়, সে দেশের ভিখারী, প্ৰাতঃকালীন আহার সমাপনপূর্বক দ্বিপ্রহরে যে, হিন্দুগৃহস্থের দ্বারে উপনীত হইয়া আপন ভিক্ষাকুলি পূর্ণ করিবে, তাহাতে আর সন্দেহ কি ? কিন্তু “জয় রাধে” বলিয়া কঙ্কণবলয়াভরণা বৈষ্ণব-কন্যা অথবা “ভিক্ষা দাও মা” বলিয়া নধরকায় যুবা যখন আমাদের অনুকম্পার পাত্ৰ হইয়া ভিক্ষাপাত্র পরিপূর্ণ করিতে থাকে, তখন সমাজে অলক্ষিত ভাবে যে অকল্যাণ সঞ্চারিত হয়, তাহা কি ভূত্যাভাবে ব্যতিব্যস্ত গৃহস্থ অনুভব করিতে অক্ষম ? স্বীকার করি শ্রামিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাইলে শ্রম-বিনিময়ে তাহারা অল্পধন উপাৰ্জন করিবে ; কিন্তু মজুরী অল্প হইলে অন্য নানাবিধ ব্যবসায়ের অনুষ্ঠান হইয়া পুনরায় যে তাহদের অবস্থার পরিবর্তন হইবে একথা কে না বুঝিতে পারে ? পুৰ্ব্বে এক টাকায় যে পরিমাণ সামগ্ৰী