পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (দ্বিতীয় খণ্ড) - গিরীন্দ্রকুমার সেন.pdf/১৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধনভোগ । აპმა সকল বিষয়ে ভারতবাসী নানাবিধ দ্রব্য ভোগ করিয়া অধিক ব্যয় করিতে এক প্রকার কৃতসঙ্কল্প। লোকে কথায় বলে “রোজগার নাই, বাবুয়ানী আছে।” সমগ্ৰ ভারতবাসীর পক্ষে এই কথা প্ৰযুজ্য। চটের কালে ছুটির সময় একবার যাইলেই দেখা যাইবে, শ্রমিকদের গায়ে রঙ্গিণ জামী, উড়াণী, পায়ে মোজা জুতা, মুখে সিগারেট । আহারীয় দ্রব্যের পণ বৃদ্ধি হওয়ায় তাহার অর্থপরিমিত বেতন-বৃদ্ধিতে যথার্থ বেতন-বৃদ্ধি হয় নাই ; অধিকন্তু জুতা জামা ইত্যাদির ভোগবিলাসে তাহাদের ধন-নাশ হইতেছে । সভ্য জগতে বাতি জ্বালিতে ও অন্যান্য বিষয়ে দেশলাই আবশ্যক হয়, কিন্তু দেশলাইয়ের অভাবে চাষীর বিশেষ ক্ষতি হয় না। দুই চারিটি দেশলাইয়ে তাহার সংবৎসরের আবশ্যক মত কাৰ্য্য সিদ্ধ হইতে পারে । চকমকি ব্যবহার না করিয়া তাহাকে মাসিক দুই আনার হিসাবে এক মণ ধান্যের বিনিময়ে এক বৎসরের দেশলাই ক্রয় করিতে হয় । ইংলণ্ডের লোক প্রতি বার্ষিক আয় বিয়াল্লিশ পাউণ্ড, কিন্তু ভারতবর্ষে প্ৰায় দেড় পাউণ্ড বা পনর মণ ধান্য ! পূৰ্ব্বে মনুষ্যগণ সকল বিষয়েই অল্প অভাব অনুভব করিত। অন্যান্য জীবজন্তুর ন্যায় আদিম মানবের আহারের অভাবই প্ৰধান অভাব ছিল ; কিন্তু স্বভাবজাত ফল মূলে ও বন্য পশু দ্বারা সে অভাব অনেক পরিমাণে নিরাকৃত হইয়াছিল । তথাপি তাহার। আর একটিী অভাব রহিল ; তাহ লজানিবারণের নিমিত্ত বস্ত্ৰ । যে দিন এই অভাব অনুভূত হইল, সেই দিন হইতেই মানবজাতি লজ্জা-নিবারণের উপায় উদ্ভাবনে যত্নশীল ও ঝড় বৃষ্টি রৌদ্র হইতে রক্ষা পাইতে সচেষ্ট হইয়াছে। অনন্যমনে কৰ্ম্মফল বুদ্ধির সাহায্যে শস্য উৎপাদন করিয়া যখন উদ্বত্ত শস্যের বিনিময়ে অপর লোকের পরিশ্রম-প্রাপ্তি সম্ভবপর হইল, সেই সময় হইতে গৃহকাৰ্য্য ও অন্যান্য কাৰ্য্যে সাহায্য পাইবে বলিয়া এবং স্বাভাবিক মানবপ্রবৃত্তির বশীভুত