পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (দ্বিতীয় খণ্ড) - গিরীন্দ্রকুমার সেন.pdf/১৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কলিকাতায় অৰ্দ্ধোদয় যোগ ও স্বদেশ-সেবা । ১৬১ অতিক্রম করিয়া তাহারা পলায়ন করিতে পারে নাই। কুমারটুলীর ঘাটে আমরা স্বয়ং দেখিয়াছি, এরূপ একটা চোর একটা বালিকার কণ্ঠ হইতে হার চুরী করিয়া পলাইবার সময় ভলণ্টিয়ার হস্তে ধৃত ও লাঞ্ছিত হইয়াছে। কত যাত্রী গঙ্গাস্নানে আসিয়া পীড়িত হইয়াছে, অনেকে কলেরা প্ৰভৃতি রোগে আক্রান্ত হইয়া প্ৰাণত্যাগ করিয়াছে । তাহাদের এই বিপদে তাহদের নিকটতম আত্মীয় পৰ্য্যন্ত দূরে সরিয়া দাড়াইতে কুষ্ঠিত হয় নাই, কিন্তু নিরাশ্রয় বিপন্ন ও মৃতকে ভলাণ্টিয়ারের পরিত্যাগ করেন নাই | পীড়িতদিগের যথাসাধ্য পরিচর্য্যা করিয়াছেন । অৰ্দোদয় যোগ আমাদের ধৰ্ম্ম জগতের ইতিহাসে একান্ত দুলভি ও বিরল হইতে পারে, কিন্তু আমাদের জাতীয় জীবনের ইতিহাসে আত্মত্যাগ ও সেবার এরূপ জীবন্ত ও জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত এই প্ৰথম । অনেকে ব্যক্তিগত ভাবে সেবার জন্য ধন্য হইয়াছেন, এখনও কোন কোন সন্ন্যাসী সম্প্রদায়, বিশেষতঃ রামকৃষ্ণ মঠের সেবক সম্প্রদায় ভারতের বিভিন্ন তীর্থে বিপন্নের ও আৰ্ত্তের সেবার যে মহনীয় দৃষ্টান্ত প্রদর্শন করিতেছেন, তাহা অতুলনীয় ; কিন্তু দেশের সর্বসাধারণ যুবকগণ, এমন কি কত সন্ত্রান্ত বংশীয় যুবক, সে দিন যে সেবার ভাবে অনুপ্রাণিত হইয়াছিলেন, যে কার্য্যশৃঙ্খল প্রদর্শন করিয়াছিলেন, এতবড় বৃহৎ ব্যাপারকে যেমন নিৰ্ব্বিপ্নে চালাইয়াছিলেন, তাহ দেখিয়া আমাদের মনে হইয়াছে আমাদের নিরাশ, হতাশ ও ভগ্নোদ্যম হইবার কোনও কারণ নাই ; আবার আমরা মানুষ হইয়া নিজের ভার নিজে গ্ৰহণ করিতে পারিব, নিজের বিপদ নিজে দূর করিতে পারিব, যাহারা চলিতে না শিখিয়াছে তাহদের হাত ধরিয়া চলাইতে পারিব।--তাহার পুৰ্ব্ব-স্ত্চন। সেই অৰ্দ্ধোদয় যোগের দিন দেখা গিয়াছে । সেদিন ཕ আমরা দুষ্কর সাধনার প্রথম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়াছি, সেদিন আমা দের আত্মশক্তিতে বিশ্বাস দৃঢ় হইয়াছে। তাই বুলিতেছি, ধৰ্ম্মের