পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (দ্বিতীয় খণ্ড) - গিরীন্দ্রকুমার সেন.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের ঋতু সকল । 9܆ ܓ পরিবারবর্গে বেষ্টিত হইয়া সুখশান্তি ও সস্তুপ্তির সুধাস্বাদ করিতেছে। দশহারার গঙ্গামান, সৰ্পভীতি নিবারণের মানসে দুগ্ধপান, এবং অম্বুবাচির পূর্ব হইতে হিন্দুরমণীদিগের ফলাহার-সঞ্চয় যে কতদিন হইতে প্ৰবৰ্ত্তিত হইয়াছে, তাহ কে বলিতে পারে ? নিদাঘের অবসানে প্রাবৃটের অবিশ্ৰান্ত ধারাপাতে প্ৰকৃতির সাম্য পরিদৃশ্যমান হয়। মৃত প্রায় তৃণাবলী নব বারিসংস্পর্শে সজীব হইয়া বসুন্ধরাকে নব সাজে সজ্জিত করে। পুষ্করিণী, নদ নদী ও খাল বিল জলে পরিপূর্ণ হইয়া মানব-মনে এক নূতন আনন্দের স্রোত আনিয়া দেয়। ধনী, ধীবর ও নৌকাজীবীর আনন্দ বৰ্দ্ধিত হইতে থাকে এবং অতিবৃষ্টির আতিশয্যে পর্ণকুটীরবাসিগণের উটজাবলী ভগ্ন হইলে 'তাহারা মেঘবারির সহিত অশ্রুবারি মিশাইতে থাকে। প্রয়োজনের অনুরূপ বৃষ্টি হইলেই কৃষকের আনন্দ, নচেৎ অতিবৃষ্টিতে মাঠ ঘাট ভাসিয়া গেলে সমস্ত হাজিয়া পচিয়া শুধু কৃষক কেন গৃহস্থ মাত্রেরই নিরানন্দ উপস্থিত হয়। তরি তরকারী দুৰ্ম্মল্য হয় এবং যাহারা পূৰ্ব্ব হইতে ইন্ধনাদির সঞ্চয় কবিয়া রাখে নাই,তাহদের তন্নিবন্ধন অত্যন্ত অভাব ও ক্লেশ অনুভব করিতে হয়। রোপিত ধান্ত ও পাটের ক্ষেত্রগুলি সজীপ ভাব ধারণ করিল। কমলার ললিত উদার হাস্য কৃষকের শাস্তক্ষেত্রগুলির সর্বত্র প্রকাশ, পাইতে লাগিল। গ্রীষ্মের পুনস রসাত্ৰ এখনও ফুরায় নাই, প্রকৃতির বঙ্গভাণ্ডারে কঁাটাল ও আনারস অপৰ্য্যাপ্ত, কালাজাম, জামরুল ও কদলী ভক্ষণ করিয়া বালকগণের আশা পরিতৃপ্ত হইতেছে না। ক্ষুদ্র লালকেরা সুর করিয়া বলিতেছে এ রথেতে যাবনােক উল্টে রথে যাব, দুই ভায়েতে যুক্তি করে কাটাল কিনে খাব। পল্লীগ্রামে রথের সময় কি আনন্দ ! সুদূর, স্থান হইতে, যেখানে রাগ চলিলে, সকলেই সেই দিকে ধাবমান। সাত আট দিন ধৰিয়া কে বলা পোকা ।