পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (দ্বিতীয় খণ্ড) - গিরীন্দ্রকুমার সেন.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

NV) বিবিধ প্ৰবন্ধ । পাওয়া যায় না। এই বিধির বিপরীত প্ৰথা-অবলম্বনে পূর্বের প্রাণমন-দিয়া সেই আলিঙ্গন-প্ৰথা যতই নিরর্থক বলিয়া অনুমিত হইতেছে, ততই সমাজ কেন,—জাতীয়তাও যেন শ্লথ ও বিকর্ষিত হইতেছে । শরতের প্রখর রবি করে উত্তাপিত হইয়া মানবগণ সিতশান্ত শশধরের স্মৃহা করিতে করিতে বিভােবরীর প্রতীক্ষায় দিনমান অতিবাহিত করে। দিবাকরের তীব্র তাপে খাল বিল ও পয়ঃপ্রবাহ সমুদায় শুষ্ক হওয়াতে তাহদের অভ্যন্তরস্থ লতাগুল্মাদির পচন ও বিয়োজন জন্য দুর্বাষ্পরাশি সমুদগত হইয়া তরুণ জ্বরের সুচনা করিয়া দিতেছে। এই জ্বর সময়ে সময়ে দেশব্যাপিরূপে প্ৰাদুভূত হইয়া গৃহস্থমাত্রেরই মনে বিভীষিকার সঞ্চার করিয়া থাকে । শরতের অবসানে হেমন্তের রাজ্য প্ৰকাশিত হয়। যেন কিছু শীঘ্রই দিবা অবসান হইতে চায়। গৃহস্থের বৈকালীন ভোজ্য-প্ৰস্তুতিতে অগ্নির ধূম আর উপরে উঠিতে পারিতেছে না । আহারেরও পরিবর্তন দেখিতে পাওয়া যাইতেছে । অনেকে বৈকালে অন্নের পরিবর্তে গোধূমজাত সামগ্রীতে সন্তুষ্ট। ডেঙ্গোর ডাটা, বিলাতী কুমড়া, ঝুনা নারিকেল, কচুর শাক ও ইলিশ মৎস্ত ভুলিয়া যাইবার উপক্রম হইতেছে। পালম শাক, মুলা, নূতন আলু ইত্যাদির গন্ধে তরকারীর বিশেষত্ব অনুভূত হইতেছে। বর্ষা ও শরতে দ্রব্যসামগ্ৰী যেমন কীটদষ্ট হইতেছিল, হেমন্তে বঙ্গের অধিকাংশ মানব সেইরূপ ম্যালেরিয়া রাক্ষসী কর্তৃক দষ্ট হইতে লাগিল। এই বিষে জর্জরিত হইয়া তাহাদের স্মৃৰ্ত্তি কোথায় চলিয়া গিয়াছে। দুর্গোৎসবের অট্টহাসি এখন কাষ্ঠ হাসিতে প্ৰকাশিত হইতেছে। উদ্যমের পরিবর্তে আলস্য ও দীর্ঘসুত্ৰত এখন প্রিয়সহচর হইয়াছে। বর্ষার বারিপাতে উৎফুল্লচিত্ত হৃষ্টপুষ্ট কৃষক স্বহস্তে হলচালনা করিয়া যে ধান্য রোপণ করিয়াছে, আজ সে কি করিয়া উহা কাটিয়া ঘরে তুলিবে গালে হাত দিয়া তাহাই ভাবিতেছে। দ্বিগুণ