পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় ভাগ । כפי নিৰ্ম্মিত হইত। ঐ সময়ে, বিশেষতঃ অধস্তন প্রস্তরযুগ প্রবর্তিত হইলে, স্বর্ণ এবং রৌপ্যেরও কিয়ৎপরিমাণে ব্যবহার আরব্ধ হইয়া গিয়াছিল। কিন্তু ধাতব দ্রব্যের মধ্যে তাম্রই সৰ্ব্বাপেক্ষ সুলভ। উহা প্রায়ই ভূগর্ভে অতি গভীরভাবে নিহিত থাকে না এবং অনেকানেক স্থলে উহা অবিমিশ্র অবস্থাতেও অধিক পরিমাণে পাওয়া যায় । বস্তুতঃ কোন কোন দেশের ভাষায় উহ! লোহিতপ্রস্তর নামেই খ্যাত । অস্ত্রাদি প্রস্তুত করিবার নিমিত্ত কঠিনতম প্রস্তরের অন্বেষণ করিতে করিতেই নরগণ তাম্র প্রাপ্ত হইয়াছিল। এবং তাম্রকে এক প্রকার প্রস্তর বলিয়াই মনে করিয়ছিল। পরে উহার উন্থার বিশেষ গুণ জানিতে পারে। প্রথমে অবিমিশ্র বৃহৎ বৃহৎ তাম্রখগুকে প্রস্তর দ্বারা পিটিয়াই প্রয়োজনীয় অস্ত্ৰ শস্ত্রাদির প্রস্তুত হইয়াছিল, পরে তাম। গলাইয়া লইবারও উপায় আবিষ্কৃত হইয়া উঠে । ফলতঃ প্রস্তরযুগের পরেই যে একটি তাম্রযুগ দেখা দিয়াছিল, একথা বলা যাইতে পারে। পরস্তু তাম্রযুগ সমধিককাল স্থায়ী হয় নাই । যখন তামা গলাইয়া ঢালিয়া লইবার উপায় উদ্ভাবিত হয়, তখন মমুয্যের বিষয়ঞ্জতা অনেক বদ্ধিত হইয়াছে বলিতে হইবে । তখন অপর একটা ধাতু যথা রাঙ্গ বা টিন পাইলে তাহাকে তামার সহিত মিশাইয়া একটী মিশ্রধাতুর উৎপাদন করা আর তত কঠিন কাৰ্য্য হয় নাই। বিশেষতঃ বিশুদ্ধ তামা অধিক নমনীয় । তাহা হইতে যে অস্ত্ৰ শস্ত্রাদি প্রস্তুত হয়, তাহা তেমন কঠিন বা তীক্ষুধার হয় না । এই জন্ত তামাকে সমধিক কঠিন করিয়া লইবার প্রয়োজন স্বতঃই উপলব্ধ হইয়া থাকে। তামা এবং রাঙ্গের মিশ্রণে যে ধাতু উৎপন্ন হয়, তাহার ইংরাজী নাম ‘ব্রনজ । বাঙ্গালায় উহাকে পিত্তল বলে—আর তাম এবং দস্তার মিশ্রণে যাহা উৎপন্ন হয়, তাহাকেও পিত্তল বলা যায় । যে সময়ে নরগণের মধ্যে পিত্তল বিনিৰ্ম্মিত অস্ত্ৰ শস্ত্রাদির বহুল ব্যবহার, সেই সময়টকে পৈত্তলযুগ বলা গিয়া থাকে । পৈত্তলযুগটা তাম্রযুগের ন্যায় স্বল্পকালস্থায়ী হয় নাই । পিত্তলযুগের উদাহরণস্থল অতি বিস্তৃত । প্রাচীন গ্ৰীকেরা মহাকবি হোমরের সময় পৰ্য্যন্ত পিত্তল বিনিৰ্ম্মিত অস্ত্ৰ শস্ত্রাদির সমধিক ব্যবহার করিত। রোমীয়দিগের মধ্যেও পিত্তলমণ্ডিত ঢাল সমধিক প্রচলিত ছিল । কিন্তু ঐ দুই জাতীয় লোকেরা এবং মিসরীয়, ফিনিকীয়, পারসিক প্রভৃতি প্রাচীন জাতীয়েরা যে সকল পিত্তলেরই ব্যবহার জানিত এমত নহে। উছার সকলেই লৌহ ধাতুর গুণও জানিতে পারিয়াছিল। অতএব উহা