পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$ኃ বিভতিভাষণের শ্রেষ্ঠ গল্প হইয়াছে। পাহাড়পবীত, অরণ্য ও বন্ধীর ভাখন্ড-কোনোটারই ভীমকান্ত সৌন্দষকে কবি দেখান নাই, কারণ তিনি দেখেন নাই । তাঁহাদের সিনগধ ও সন্দর দিকটাই তিনি দেখিয়াছেন এবং আকিয়াছেন। মানব-প্রকৃতির দািদমি ব্যক্তিগলিকে যেমন তিনি অঙ্কিত করেন নাই, তাহদের প্রাত্যহিক ক্ষদ্র রািপটাকেই যেমন তিনি অঙ্কিত করিয়াছেন, তেমনি প্রকৃতি সম্পবন্ধেও তিনি এই নিয়ম অনসরণ করিয়াছেন । বয়স বাড়িলেও, অপ বালকই থাকিয়া গিয়াছে, বাল্যজীবনের সরল সৌন্দযই তাহার প্রধান সম্পদ। এই সরল সৌন্দয্য অঙ্কনেই বিভতিভষণের শ্রেষ্ঠ কৃতিত্ব। প্রকৃতির মধ্যেও সেই সরল সৌন্দযোির তিনি সন্ধান করিয়াছেন। পল্লী-প্রকৃতিতে তাহা সহজলভ্য । পাহাড়পবতে ও দগম অরণ্যে তাহা সহজলভ্য নয়, কিন্তু একেবারে দলভিও নয় । এই দালাভের আবিস্কারেই বিভতিবাবর প্রতিভা প্রকাশ পাইয়াছে। বিভতিবাব সমস্ত মানবসমাজকে অপর সমাবেশরীপে দেখিয়াছেন, আবার প্রকৃতির বিভিন্ন রপকেও পল্লীপ্রকৃতির রূপান্তরভাবে দেখিয়াছেন । তিনি কৈশোরের কবি, সরল, সৌন্দয্যের সন্ধানী। গাহের আঙিনা তাঁহাকে যেমন মগধ করে, এমন আর কিছ নয় । জীবন তাঁহার কাছে সংগ্ৰাম নয়, খেলাঘর। সেইজন্য রণক্ষেত্র তাঁহাকে আকৰ্ষণ করে নাই, করিয়াছে বালকের খেলাঘর । বহৎ বিশবকে খেলাঘরে পরিণত কারিয়া দেখিতে না পারিলে যেন তাঁহার তৃপ্তি নাই। বিভতিভষণের বিশব একটি সবাহৎ ও সবিচিত্র খেলাঘর ; তাহার অধিবাসীরা সকলেই বালক-বালিকা, সেখানকার পাহাড়পবর্ভূত অরণ্য প্রাণত্তর সবই খেলাঘরের মাপের । তাঁহার বিশবকমা নিজেহ যেন বালক, খেলার সঙ্গী গাডিয়া খেলার শখ মিটাইয়া লইতেছেন-বিভতিভীষণ নিজেও শেষ পযন্ত বালক ছিলেন । তাই জীবনের জটিল ও দগম দিকটা তাঁহার চোখে পড়িত না, বি ংবা পড়িলেও জটিলতার মম বঝিতে পারিতেন না, সমস্তকেই নিজের ছাঁচে সবল করিয়া প্রকাশ করিতেন । তাঁহার 'দেবযান’ গ্রন্হখানিও এমনি একটি রহস্যময় খেলাঘর। রহস্যময় এইজন্য বললাম যে, খেলাঘরের মতো। রহস্যময় আর কি হইতে পারে। জীবনের সমস্ত সবাদ যে ক্ষদ্রায়তনে পাওয়া যায়, তাহার আয়তনের ক্ষদ্রতাই কি দেখিব ? তাহার রহস্যের অতলতা কি কিছুই নয় ? পরলোকের মতো ব্যাপার, যাহার প্রমাণ নাই, যাহার অস্তিত্বে অনেকেই অবিশবাসী, তাহাকে শিল্পবস্তুতে পরিণত করা সহজ নয়। ইন্দ্ৰিয়াতীতকে ইন্দ্ৰিয়গ্রাহারাপে প্রকাশের মাধ্যম কোথায় ? দিয়ের মাপকাঠি যে সম্পণে সর্বতন্ত্র। তব বিভতিবাব দেবযানে যে কৃতিত্ব দেখাইয়াছেন তাহা অসাধারণ। পরলোককেও তিনি একটি খেলাঘররপে রচনা করিয়াছেন, বড় জোর সে যেন ও-বাড়ির খেলাঘর, বড় জোর তাহার খেলড়িয়া যেন আব-এক জন্মের লোক । হয়তো ঐ একটিমাত্র রাপেই পরলোককে ইন্দ্ৰিয়গ্রাহ্য শিল্পবস্তুতে পরিণত করা সম্পভব, অন্য পন্হা হয়তো সত্যই নাই । যাঁহারা দেবযান গ্রন্হে পরলোকতত্ত্ব দেখিতে পান তাঁহাদের সঙ্গে আমি