পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sb বিভতিভষণের শ্রেষ্ঠ গল্প একদিন আমার শাশাড়ী বলেন-ও বোমা, তোমাদের গায়ের কে একটি ছেলে আমাদের গ্রামে হাঁর কলার বাড়ীতে এসে চাকরি করচে । বামনের ছেলে, দিব্যি চেহারা। কিন্তু বাপ, কলাবাড়ী জল তোলে, গরর জাব কাটে, এ আবার কেমন কথা ! বন্ড গরীব বোধ হয় । আমি দেখি নি, কে কাল বলছিল। ঘাটে । বলে, বৌমার দেশের লোক । যেদিন শািনলাম, সেইদিনই পথে নসমোমার সঙ্গে দেখা । কিন্তু প্রথমটা চিনতে পারি নি। নসমোমার মাথায় বড় বড় চুল, পরনে শাড়ী, আধ-ঘোমটা দেওয়া, হাতে কাঁচের চুড়, মেয়েলি বেশ, অথচ মাথো ঈষৎ গোঁফ-দাঁড় । আমার হাসি পেল ওর অপরােপ বেশ দেখে। আমায় দেখে মেয়েলি সরে বলে-ও •ौका, छाळ आछिन्न ऊा छाझे ? আমি অবাক হয়ে বললাম-তোমার এ কি বেশ নসমোমা ? নসমোমা অদ্ভুত হাসি হেসে বলে-এই, থাকলেই হলো একরকম । --তুমি নাকি কলাবাড়ী বাসন মাজো, জল তোলো ? -gलास कि ? --তুমি যা ভালো বোঝো । বন্ধা শাশড়ী সেই শ্রাবণ মাসে দেহ রাখলেন। দিন-দশেক জবারে ভূগে গভীর রাতে মাতৃত্যুর কিছু পর্বে অশ্লভরা চোখে আমার দিকে চেয়ে বল্লেনতোমাকে কার কাছে রেখে যাচি মা ? বন্ধার আকুল সৱে মনে ব্যথা বাজল আমার । তাঁর জবরশীণ হাত-দটি ধরে বল্লাম-কেন, আমার সোনার চুড়ি আছে, এক বিঘে আমন ধানের জমি আছে-ভাবনা কি মা আমার ? কিছ: ভেব না। আমার জন্যে । বিষয়ী লোককে বিষয়ের ভাষায় সান্ত্বনা দিই। আমি জানি যাঁর কাছে আমি আছি, তিনি আমায় কোনদিন ফেলবেন না, চরণে সহান দেবেনই। নসমোমার সঙ্গে দেখা আবার একদিন । সে একগাদা কাপড় সেন্ধ নিয়ে ঘাটে যাচ্চে কাচতে। আমি বল্লাম-ও-সব কাজ আমায় দাও নসমোমা। আমি তোমায় করতে দেবো না । জোর করে সেগলো তার কাছ থেকে নিয়ে নিজে কেচে দিলাম । আমার চোখের সামনে ও-সব খাটনি খাটতে দেবো না ওকে । বল্লাম-হাঁর কলার বাড়ী গোয়াল পরিস্কার আমি করে দেবো । --না পাঁচী, লক্ষীটি, লোকে কি বলবো ? --আমি গ্রাহ্য করিনে । --আমি করি । -মিথ্যে কথা, তুমি কিছ গ্রাহ্য কর না, কলাবাড়ী বাসন মাজচো অথচ—পাঁচী, এ সব তুই বািকবিনে। ওসব করিসনে কক্ষনো। ওর কথা সান্যাল জ্যাঠাকে বলতে তিনি বড় ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। ওকে দেখবার জন্যে । হরি কলর বাড়ীর পিছনে একটা পকূর, পকুরের চারিধারে আম-কাঁঠালের বাগান। তারই একটা গাছতলায় দেখা গেল ও চোখ বাজে বসে।