পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তারানাথ তান্ত্রিকের গলাপ SS& কারবার খলিল এবং গরদত্ত ক্ষমতা ভাঙাইয়া খাইতে শার, করিল। শেয়ার মাকেট, ঘোড়দৌড়, ফাটকা ইত্যাদি ব্যাপারে সে তাহার ক্ষমতা দেখাইয়া শীঘ্রই এমন নাম করিয়া বসিল যে, বড় বড় মাড়োয়ারীর মোটর গাড়ির ভিড়ে শনিবার সকালে তার বাড়ীর গলি আটকাইয়া থাকিত । পয়সা আসিতে শার করিল অজস্র । যে পথে আসিল, সেই পথেই বাহির হইয়া গেল । হাতে একটা পয়সা দাড়াইল না । তারানাথের জীবনে তিনটি নেশা ছিল প্রবল । ঘোড়দৌড়, নারী ও সারা । এই তিন দেবতাকে তুষ্ট রাখিতে কত বড় বড় ধনীর দালাল যথাসৰ্ববস্ব অ্যাহতি দিয়া পথের ফকির সাজিয়াছে, তারানাথ তো সামান্য গণৎকার ব্লাহ্মণ মাত্র । প্রথম কয়েক বৎসরে তারানাথ যাহা পয়সা কবিয়াছিল, পরবত্তী কয়েক বৎসরের মধ্যে তাহা কপরের ন্যায়। উবিয়া গেল । এদিকে ক্ষমতার অপব্যবহার করিতে করিতে ক্ষমতাটকুও প্রায় গেল। ক্ষমতা যাইবার সঙ্গে সঙ্গে সত্যিকার পসাের নন্ট হইল। তবও ধাওঁতা ফন্দিবাজি, ব্যবসাদারি প্রভৃতি মহৎ গণরাজির কোনটিরই অভাব তারানাথের চরিত্রে না। থাকাতে, সে এখনও খানিকটা পসার বজায় রাখিতে সমর্থ হইয়াছে। কিন্তু বৰ্ত্তমানে কাবলী তাড়াইবার উপায় ও কৌশল বাহির করিতেই তারানাথের দিবসের অধিকাংশ সময় ব্যয়িত হয় । তন্ত্র বা জ্যোতিষ আলোচনার সময়ই বা কই ? আমার মত গণমাগধ ভক্ত তারানাথ পাসার নম্পট হওয়ার পরে যে পায় নাই একথা খাবই ঠিক । আমাদের পাইয়া তাহার নিজের উপরে বিশ্ববাস ফিরিয়া আসিয়াছে। সতরাং আমার উপর তারানাথের কেমন একটা বন্ধত্ব জন্মিল । সে আমায় প্রায়ই বলে, তোমাকে সব শিখিয়ে দেব ! তোমাকে শিষ্য করে রেখে যাব, লোকে দেখবে তারানাথের ক্ষমতা কিছু আছে কি না । লোক পাইনি এতকাল যে তাকে কিছ দিই । একদিন বলিল-চন্দ্ৰদশন কবিতে চাও ? চন্দ্রদশর্ন তোমায় শিখিয়ে দেব । দাই হাতের আঙিলে দাই চোখ বজিয়ে চেপে রেখে দাই বন্ধাঙ্গািঠ দিয়ে কান জোর করে চেপে চিৎ হয়ে শয়ে থাক । কিছদিন অভ্যোস করলেই চন্দ্ৰদশন হবে । চোখের সামনে পণচন্দ্র দেখতে পাবে । ওপরে আকাশে পণচন্দ্র আর নীচে একটি গাছে দটি পরী-তুমি যা জানতে চাইবে পরীরা তাই বলে দেবে । ভালো করে চন্দ্ৰদশন যে অভ্যোস করেছে, তার অজানা কিছ: থাকে না। চন্দ্ৰদশন করি আর না করি, ৩ারানাথের কাছে প্রায়ই যাইতাম । লোকটি এমন সব অদ্ভুত কথা বলে, যা পথে-ঘাটে বড় একটা শোনা তো যায়ই না, দৈনন্দিন খাটিয়া খাওয়ার জীবনের সঙ্গে তার কোন সম্পক ও নাই। পথিবীতে যে আবার সে সব ব্যাপার ঘটে তাহাও কোনদিন জানা ছিল না । একদিন বিষরি বিকেলবেলা তারানাথের ওখানে গিয়েছি। তারানাথ পরাতন একখানা তুলোট কাগজের পথির পাতা উলটাইতেছে, আমাকে দেখিয়া বলিল -চল বেলেঘাটাতে একজন বড় সাধ এসেছেন দেখা করে আসি। খব ভাল