পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩ারানাথ তানিয়কের গলাপ NSók সাধ, ছিলেন। আমার এক খড়িমা তাঁর কাছে দীক্ষা নিয়েছিলেন, আমাদের ছেলেবেলায় আমাদের বাড়ী প্রায়ই আসতেন । তিনি আমাদের খব ভালোবাসতেন, আমাদের বাড়ী এলেই আমাদের নিয়ে গলপ করতে বসতেন, আর আমাদের প্রায় বলতেন—দই চোখের মাঝখানে ভ্ৰ, থেকে একটি জ্যোতি আছে, ভালো করে চেয়ে দেখিস, দেখতে পাবি, খাব একমনে চেয়ে দেখিস । মাস দাই-তিন পরে আমার একদিন জ্যোতি দশন হলো । মনে ভাবিলাম-চন্দ্ৰদশনের মত নাকি ? মাখে জিজ্ঞাসা করিলাম-কি ধরনের জ্যোতি ? -ঠিক নীল বিদ্যুৎশিখার মত প্রথম একদিন দেখলাম সন্ধ্যার কিছ. আগে । বাড়ীর পিছনে পেয়ারাতলায় বসে সাধার কথা-মত নাকের উপর দিকে ঘণ্টাখানেক চেয়ে থাকতুম,—সব দিন ঘটে উঠত না, হাপ্তার মধ্যে দ-তিনদিন বসতাম। মােস তিন পরে প্রথম জ্যোতি দশন হলো, নীল লিকলিকে একটি শিখা, আমার কপালের মাঝখানে ঠিক সামনে, খাব স্থির, মিনিটখানেক ছিল প্রথম দিন । এইভাবে ছেলেবেলাতে সাধসন্ন্যাসী ও যোগ ইত্যাদি ব্যাপারে আকৃষ্ণটি হয়ে পড়ি। বাড়ীতে আর মন টেকে না, ঠাকুরমার বাক্স ভেঙে একদিন কিছ. টাকা নিয়ে পালিয়ে গেলাম। একেবারে সোজা কাশীতে । একদিন অহল্যা বাঈয়ের ঘাটে বসে আছি । সন্ধ্যা তখন উত্তীণ হয়নি, মন্দিরে মন্দিরে আরতি চলেছে, এমন সময় একজন লম্বাচওড়া চেহারার সাধকে খড়ম পায়ে দিয়ে কমন্ডল হাতে ঘাটের পৈঠায় নামতে দেখলাম। তার সারাদেহে এমন কিছ একটা ছিল যা আমাকে আর অন্যদিকে চোখ ফেরাতে দিলে না. সাধ তো কতই দেখি । চুপ ক’রে আছি, সাধবাবাজী জল ভ'রে পৈঠা বেয়ে উঠতে উঠতে হঠাৎ আমাব দিকে চেয়ে খাসা বাংলায় বললেন-বাবাজীর বাড়ী कथ: ? আমি বললাম-বাঁকুড়া জেলায়, মালিয়াড়ী রন্দ্রপরে । সাধা থমকে দাঁড়ালেন । বললেন-মালিয়াড়া রবীন্দ্রপরে 1 তারপর কি যেন একটা ভাবলেন খাব অলপক্ষণ, একটা যেন অন্যমনস্ক হয়ে গেলেন, তারপর বললেন-রােন্দ্রপরের রামরাপ সান্যালের নাম শনেছ ? তারপর বললেন—তাদের বংশে এখন কে আছে জান ? আমাদের গ্রামের সান্যালেরা এক সময়ে খাব অবস্থাপন্ন ছিল, খব বড় বাড়ীঘর। দরজায় হাতী বাঁধা থাকতো শানেছি-কিন্তু এখন তাদের অবস্থা খাব খারাপ। কিন্তু রামরােপ সান্যালের নাম তো কখনো শনিনি। সন্ন্যাসীকে সসম্পন্দ্রমে সে কথা বলতে তিনি হেসে বললেন-তোমার বয়েস আর কতটুকু। তুমি জানবে কি করে ? খেয়াঘাটের কাছে, শিবমন্দিরটি আছে তো ? খেয়াঘাট । রুদ্রপরে নদীই নেই, মজে গিয়েছে কোন কালে, এখন তার ওপর দিয়ে মানষি গোর হোটে চলে যায়। তবে পরনো নদীর ঘাটের ধারে একটি বহল প্রাচীন জীণ শিবমন্দির জঙ্গলাবিত হয়ে পড়ে আছে বটে, শানেছি সান্যালদেরই কোন পদ্বীপরাষ ঐ শিবমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু এসব