পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভপড়লামামার বাড়ী SBని থাড। ইয়ারে পড়ি। ভ“ডুলামামা বললেন-এস একবার আমাদের বাসায় । তোমাম মামী তোমায় দেখলে খংশি হবে । সামনের রবিবার তোমার নেমন্তান্ন রইল, অবিশ্যি যাবে। গেলাম, ভন্ডুলমামার ছেলেদের সঙ্গে আলাপ হলো । ভঙুলমামা অনাযোগের সারে বললেন,-ওদের বলি, যা একবার এই সময়ে । আষাঢ় মাসে দেশে গিয়ে উঠোনে খাসা বরবটি আর শিম লাগিয়ে রেখে এসেচি, মাচাও বেধে রেখে এসোঁচি, তা কেউ কি কথা শোনে ! মামীম ঝঙ্কার দিয়ে ব’লে উঠলেন-যাবে সেখানে কেমন ক’রে শনি ? কোনো ঘরে বাস করবার জো নেই, ছাদ ফটো হয়ে জল পড়ে । জলের ব্যবস্থা নেই বাড়ীতে, শািন্ধ, শিম আর বরবটির পাতা চিবিয়ে তো মানষে- তাতে বাড়ী হাট আলগা, পাঁচিল নেই। ভন্ডুলমামা মদ প্রতিবাদের সরে ভয়ে ভয়ে যা বললেন, তার মন্ম এই যে, মানষে বাস না করলেই বাড়ীতে বট-আশখের গাছ হয়, ছাদ অােটা হয়ে গেছে আজ অনেক দিন, কিন্তু কেউ বাস তো করে না। বাড়ী কাজেই খারাপ হয়ে থাকে। তবও তিনি বছরে দ-তিনবার যান ব’লে এখনও ঘরদোর টিকে আছে। পাতকীয়োর আর কত খরচ ? চৈত্র মাসের দিকে না-হয় ক’রে দেওয়া যাবে। আর তোমরা সবাই যদি যাও, পাঁচিল আষাঢ় মাসেই ক’রে দেওয়া যাবে। বঝেলাম পাতকীয়া এখনও বাকি । ভন্ডুলামামার বাড়ী এখনও শেষ হয়নি, এখনও কিছ বাকি আছে। কিন্তু এতদিন ধ’রে ব্যাপারটা চলচে যে এক দিক গড়ে উঠতে অন্য দিকে ধরেচে। ভাঙন । এর পর মামার বাড়ী গিয়ে দ-একবার দেখোঁচ ভন্ডুলমামা দ-পাঁচ দিনের ছটি নিয়ে বাড়ীতে এসে আছেন । এটা সারাচ্ছেন, ওটাতে বেড়া বাঁধছেন, এগাছটা খড়চোন, ও-গাছটা কাটচেন । ছেলেরা আসতে চায় না। কলকাতা ছেড়ে । নিজেকেই আসতে হয়, দেখােশানা করতে হয় ব’লে একদিন সলঙ্গজ কৈফিয়ৎ দিলেন। --পাঁচিল ? হ্যাঁ তা পচিল-সম্প্রতি একটি টানাটানি যাচ্চে - সামনের বিষয় - ঘরদোর বেধোঁচ সারাজীবন খেটে, ওই আমার বড় আদরের জায়গাতোরা না থাকিস, আমিই গিয়ে থাকি । আমি বললাম-ওখানে কেমন ক’রে থাকেন ? সারা গাঁয়েই তো মানষে নেই, মামার বাড়ীর পাড়া তো একেবারে জনশন্যে হয়ে গেছে। —কি করি বাবা, ওই বাড়ীখানার ওপর বড় দম আমার যে । দেখ, চিরকাল পরের বাসায়, পরের বাড়ীতে মানষ হয়ে ঘরের কািট বড় পেয়েছিলাম--তাই ঠিক করি বাড়ী একখানা করবই। ছেলেবেলা থেকে ওই গাঁয়েই কাটিয়েচি, ওখানটা ছাড়া আর কোথাও মন বসে না । চিরকাল ভাবতুমি রিটারার ক’রে ওখানেই বাস করব । একটা আস্তানা তো চাই, এখন না-হয় ছেলেপিলে নিয়ে বাসায় বাসার ঘরচি, কিন্তু এর পরে দাঁড়াবা কোথায় ? তাই জলাহার করেও সারাজীবন কিছ কিছু সম্প্রচয় ক’রে ওই বাড়ীখানা করেছিলাম। তা ওরা তো কেউ এল না-আমি নিজেই থাকি । না থাকলে বাড়ীখানা তো থাকবে না