পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6-x SW6 তবে বেড়াতে বেড়াতে কতকগলি কৌতুহলজনক কথা তার কানে গিয়েছে। মগধের প্রসিদ্ধ ভাস্কর মিহিরাগগুপ্ত রাজার আদেশমত ভগবান তথ্যাগতের মাত্তি তৈরী করতে আদিষ্ট হয়েছিলেন। এক বৎসর পরিশ্রম করে তিনি যে মাত্তি গড়ে তুলেছেন, তার মািখশ্ৰী এমন রাঢ় ও ভাববিহীন হয়েছে যে তা বন্ধের মাত্তি কি মগধের দন্দন্তি দস্য দমনকের মাত্তি, তা সে-দেশের লোক ঠিক বঝতে পারছে না। তক্ষশীলার বিখ্যাত দার্শনিক পড়িত যমনাচায িমীমাংসাদশানের ভাষ্যপ্রণয়ন করতে নিযক্ত ছিলেন, হঠাৎ তাঁর নাকি এমন দম্পদশা ঘটেছে যে তিনি আর সত্রের অর্থ ক’রে উঠতে না পেরে আবার বৈদিক ব্যাকরণের সবন্ত প্রকরণ থেকে পড়তে আরম্ভ করেছেন । মহাকোটাঠী বিহারের চিত্রবিদ্যা-শিক্ষক ভিক্ষ বাসৱত 'বন্ধ ও সাজােতা’ নামক তাঁর চিত্ৰখানা বৎসরাবধি চেন্টা করেও মনের মত ক’রে একে উঠতে না। পেরে বিরক্ত হয়ে ওদিক একেবারে ছেড়ে দিয়ে সম্প্রতি নাকি শাকুনশাস্ত্রের চচ্চায় অত্যন্ত উৎসাহ দেখাচ্ছেন । একদিন প্রদর্শন সন্ধান পেলে উরবিল্ব গ্রামের কাছে একটা নিজজন স্থানে একজন গো-চিকিৎসক এসে বাস করছেন । তাঁর চেহারার বণনার সঙ্গে সরদাসের আকৃতির অনেকটা মিল হলো । তখনি সে গ্রামে গিয়ে অনেককে জিজ্ঞাসা করলে, কিন্তু গো-চিকিৎসকের সন্ধান কেউ দিতে পারলে না। সেদিন ঘরতে ঘরতে অবসন্ন অবস্থায় উরাবিলাব গ্রামের প্রাতের একটা বড় বটগাছের ছায়ায় সে বসেছে। সন্ধ্যা তখনও নামেনি, ঝির ঝিরে বাতাসে গাছের পাতাগলো নাচছে, পাশে মাঠে পাকা শস্যের শীষগলো সোনার মত চিকমিক করছে, একটা দরে একটা ডোবার মত জলাশয়ে বিস্তর কুমদ ফল ফটে আছে, BDDB BBDB DDD BDD BD BYS সামনে একটা দরে একটা ছোট পাহাড় । পাহাড়ের গায়ে একটা ঝরণা । পাহাড়ের নীচে এক জায়গায় ঝরণার জল খানিকটা আটকে গিয়ে ওই ডোবার মতো জলাশয়টা তৈরী করেছে। প্রদানের হঠাৎ চোখে পড়ল, পাহাড়ের গা বেয়ে ধাপে ধাপে ঘট কক্ষে এক সন্ত্রীলোক নেমে আসছেন । দেখে তার মনে কেমন সন্দেহ হওয়াতে সে এগিয়ে গেল। ডোবার। এদিকের উচু পাড়ে গিয়ে দেখেই তার মাথাটা যেন ঘরে উঠল-এই তো ! এই তো তিনি ! ভদ্রাবতীর তীরের শালবনে ইনিই তো পথ হারিয়ে ঘরছিলেন, মাঠের মধ্যে জ্যোৎস্যনারাতে একেই তো সে দেখেছিল—তবে তাঁর অঙ্গের সে জ্যোতির এক কণাও আর নেই, পরনে অতি মলিন এক বস্ত্ৰ-কিন্তু সেই চোখ, সেই সন্দর গঠন । দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে তার মনে আর কোন সন্দেহ রইল না যে, এই তিনি। তার মধ্যে গোলমাল বেধে গেল । সে উত্তেজনার মাথায় বিহার ছেড়ে সরদাসের খোঁজ ক’রে বেড়াচ্ছিল বটে, কিন্তু দেখা পেলে কি করবে তা ভাবে নি। কাজেই সে একরকম লকিয়েই সেখান থেকে চলে এলো ।