পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 বিভতিভাষণের শ্রেষ্ঠ গল্প যায় বা দেখার আশা করা যায়-সেখানে এমন একটি আধনিক ছাঁদে খোঁপা বাঁধা, ফাসা শাড়ী-ব্লাউজ পরা, রপেকথার রাজকুমারীর মত রােপসী, নবযৌবনা বধ সজনেতলার ঘাটে বসে ছাই দিয়ে নিটােল সগৌর হাতে বাসন মাজচে, এ দশ্যটা খাপ খায় না। সকলের কাছেই এটা খাপছাড়া বলে মনে হলো । প্রৌঢ়ারাও ভেবে দেখলেন। গত বিশ-ত্রিশ বছরের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটে নি এই ক্ষদ্র ডোবার ইতিহাসে। রায় পাড়ার একটি প্রৌঢ়া বল্লেন-আহা, বেী তো নয়, যেন পিরাতিমেকিন্তু অত রােপ নিয়ে কি এই ডোবায় নামে বাসন মাজতে । না ও-হাতে কখনো ছাই দিয়ে বাসন মাজা অভ্যোস আছে । হাত দেখেই বাঁকাছি। তারপর থেকে দেখা গেল ঘরসংসারের যা কিছু কাজ শ্ৰীপতির বেী সব নিজের হাতে করাচে । ইতিমধ্যে শ্ৰীপতির কলকাতায় বদলি হবার খবর আসতে সে চলে গেল। বাড়ী থেকে । পড়ার মেয়েদের মধ্যে শান্তি ও কমলা শ্ৰীপতির বৌয়ের বড় ন্যাওটা হয়ে পড়লো। সকাল নেই বিকেল নেই, সব সময়েই দেখা যায় শান্তি ও কমলা বসে आ0छ 32न् । পাড়াগাঁয়ের গরীব ঘরের মেয়ে, অমন আদর করে কেউ কখনো রোজ রোজ ওদের লাচি-হালয়া খেতে দেয় নি। একদিন কমলা বল্লে-বৌদিদি, তোমার ঘরে কাপড় মোড়া ওটা কি ? শ্ৰীপতির বেী বল্লে-ওটা এসরাজ-বাজাতে জান বৌদি ? -একটখানি আমনি জানি ভাই, কিন্তু এ্যান্দিন ওকে বার পয্যন্ত নি কেন জানো, গাঁয়ে-ঘরে কে কি হয়তো মনে করবে। শান্তি বল্লে-নিজের বাড়ী বসে বাজাবে, কে কি মনে করবে ? একটা বাজিয়ে শোনাও না বৌদি ? একটা পরে রায় গিন্নী ঘাটে যাবার পথে শািনতে পেলেন শ্ৰীপতির বাড়ির মধ্যে কে বেহালা না কি বাজাচ্ছে, চমৎকার মিলিট ! কোনো ভিখিরী' গান গাচ্ছে বঝি ? দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খানিকক্ষণ শানে তিনি ঘাটে চলে গেলেন । ঘাটে গিয়ে তিনি মজমিদার বউকে বল্লেন কথাটা । -ওই শ্ৰীপতির বাড়ী কে একজন বোল্টম এসে বেহালা বাজাচ্ছে শানে এলাম। কি চমৎকার বাজাচ্ছে দিদি, দদগড় দাঁড়িয়ে শািনতে ইচ্ছে করে। দাপরের মেয়ে-মজলিসে শান্তির মা বল্লেন-শ্ৰীপতিব বৌ চমৎকার বাজাতে পারে এসরাজ না কি বলে, এক রকম বেহালার মত । শান্তিদের ওবেলা শনিয়েছিল রায় বেী বল্লেন-ও !! তাই ওবেলা নাইতে যাবার সময় শািনলাম বটে। সে যে ভারি চমৎকার বাজনা গো, আমি বলি বঝি কোন ফকির বোন্টম ভিক্ষে করতে এসে বাজাচ্ছে !