পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sఏ8 বিভতিভষণের শ্রেষ্ঠ গলপ লোকনাথ সে খৎ কিছতেই দাির করতে পারলেন না। একদিন সকালবেলা হস্তলিখিত পথিখানা নিয়ে তিনি পণ্যভদ্রার তীরে গিয়ে দাঁড়ালেন । জলের স্রোতে তীরলপন শরবনগালো তখন থর থর করে কাঁপছে। লোকনাথ অনেক বৎসরের পরিশ্রমের ফলস্বরপ পথিখানাকে টান মেরে নদীর মাঝখানে ছাড়ে ফেলে দিলেন, একখন্ড ইটের মতনই সেখানা সে মহত্তে ডুবে গেল, শািন্ধ, সাংখ্যোর উগ্র পশ্চিডত্যের সংঘাতে বন্যানদীর নিরক্ষর বকটি অলপক্ষণের জন্য ভয়বিহবল হয়ে উঠল মাত্ৰ । দিন যেতে লাগল। লোকনাথ পড়েবার মতন আর একস্থানে অনেক ‘ণ বসতে পারেন না । মনের শানিত তিনি দিন দিন হারাতে লাগলেন । এক একদিন সমস্ত দিন কিছই খেতেন না, কি জানি কেন, শােধ কেবল নদীর ধারে ধারে সারা দিনমান ধ’রে উদভ্ৰান্তের মতন ঘরে ঘরে বেড়াতেন । রাত্রে আকাশের দিকে চাইতেন না, যদি হঠাৎ উপর দিকে চেয়ে ফেলতেন, কালো আকাশে ভাঙা ভাঙা মেঘের ফাঁকে ফাঁকে যে সব নক্ষত্ৰ জবুল জবুল কবিত, তাদের সত্ৰস্ত দটির সামনে তিনি অনভ্যস্তপাঠ অপরাধী বালক ছাত্রের মতন সঙ্কুচিত ভাবে দালিট নামিয়ে দাঁহাতে চোখ ঢেকে ফেলতেন । রাত্রে নিতজান মাঠে চারিধার থেকে অন্ধকারে রাশি রাশি নীরব প্রশন জেগে উঠাত, ভগবান, উপবষের বেদান্তসত্রের মধ্যে এদের উত্তর মেলে না কেন ? লোকনাথ আবার অত্যন্ত একমনে দশনের পথ পড়তে শার কর~েন । কিন্তু তাঁর মািখ যদি সে সময় কেউ দেখত সে বেশ বকেও যে, তৃপ্তির চেয়ে অসন্তোষই হয়েছে তাঁর বেশি । দঃখ থেকে মন্তিলাভ করবার যে সহজ উপায়। দাশ নিকেরা নিরাপণ ক’রে গিয়েছেন, প’ড়ে শহনে দেখে লোকনাথের দঃখ থেন তাতে বেড়েই চলেছে। রাত্রে বাঁশের আড়ার পস্তকাধার থেকে ভক্তজপত্রের পতঞ্জলি বক্ৰচক্ষে গৌতমের দিকে চাইতেন, কপিলী গব্ব মিশ্রিত ব্যঙ্গহাস্যে জৈমিনির দিকে কৃপাদটিতে চেয়ে রইতেন, মািখ গলোর সঙ্গে এক আসনে বসতে হয়েছে ভেবে গভীর অপমানে ব্যাসদেব পাথির মধ্যে দিন দিন শকিয়ে উঠতে লাগলেন । রাত-দিপরের সময় অধ্যয়ন-ক্লান্ত অবসন্ন মস্তিম্পেক শয্যা গ্রহণ ক’রে লোকনাথের মনে হতো অন্ধ-অন্ধকারে ঘরের মধ্যে একটা খণ্ডপ্রলয় চলেছে। দশ নাচাযগণ যেন কেউ কারার কথা না শনে পরস্পর মহা তক তুলেছেন, তাঁদের ভাষ্যকার ও উপভাষ্যকারগণের বাগযন্ধে হাতাহাতিতে পরিণত হবার উপক্রম হয়ে উঠেছে, কথার উপর কথা চড়িয়ে দ’দিক থেকেই কথার পাহাড় গ’ড়ে তোেলবার চেন্টা হচ্ছে । লোকনাথের আর ঘােম হতো না, পরাতন ভািঙ্গজপত্রের গন্ধে ভারাকান্ত বন্ধ বাতাসে তাঁর নিঃস্বাস বন্ধ হয়ে আসত, শয্যা ছেড়ে উঠে তিনি বাইরের নিমগাছটার তলায় এসে দাঁড়াতেন । হয়তো কোন দিন ভাঙা চাদেব নীচে বিশাল মাঠ আলো-অাঁধারে অস্পন্ট দেখাত, কোনো দিন কন্টিপাথরের মতন কালো অন্ধকারে পথের তলায় ঘাসের মধ্যে থেকে কত কী কীটপতঙ্গ বিচিত্র সরে ডাকতে থাকত, বনঝোপের মাথায়