পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/২০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SSԵ বিভতিভষণের শ্রেষ্ঠ গলাপ ফােল রাশি রাশি ফািটত, লোকনাথকে দেখা যেত সেই ফল তুলে তিনি অত্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে তাদের গঠন লক্ষ্য করছেন-ঘাসের ফল সম্পবন্ধে লোকনাথের মনে হতো যে, সব ফালগলি একই গঠনের-পাঁচটি ক’রে পাপড়ি, মধ্যে একটা বিন্দ। প্রকাশড মাঠে এ রকমের ফল দ’হাজার দশহাজার, দ'লক্ষ দশ লক্ষ ফটে থাকত, লোকনাথ যদচ্ছাক্রমে এখান থেকে ওখান থেকে ফল তুলে দেখতেন, সবগলির সেই একই গড়ন, সেই পাঁচটা ক’রে পাপড়ি, মধ্যে একটা বিন্দ । লোকনাথের পিপাসা বিকারের রোগীর মত বেড়ে উঠল ! কত কি প্রশন তাঁর মনে আসে,--অসাধারণ ভয়ানক বিভীষণ সব প্রশনদৈত্য ! লোকনাথ বলতেন-জানা ও হে চৈতন্যময় কারণশঙ্ক, আমায় আরও জানাও । দিন কতক পরে সত্যই তাঁর অসহ্য যাতনা হতে লাগল। একটা বিশাল ঘনান্ধকার গণ্ডরহস্য জগৎ দ্বারপাশেবার সংকীর্ণ ছিদ্রপথ দিয়ে ক্ষীণ একটি খানি আলোকরেখা যেন তাঁর চোখে ফেলছিল, তাঁর বক্তৃক্ষ মন সমস্তটা একসঙ্গে দেখবার জন্যে ছটফট করতে লাগল,-রাত্রে তাঁর নিদ্রা হতো না-কালো আকাশে চোখ তুলে বলতেন-চোখ খালে দাও, হে মহাশক্তি, চোখ খালে দাও। ইতিমধ্যে আবার একদিন তিনি দেখলেন-একটা কি পতঙ্গ আর একটা থৈাটি পতঙ্গকে শরীর-নিঃসন্ত রসে অলেপ অলপ অচেতন ক’রে ফেলছে, বড় পতঙ্গটা হাতে তুলে নিয়ে লক্ষ্য ক’রে দেখে তাঁর মনে হলো সেটাব শাড়ের মতো ছািচলো একটা প্রত্যঙ্গের খানিকটা অংশ ফাঁপা,- একপ্রকার বিষাক্ত রস শরীরের মধ্যে থেকে বার হয়ে ঐ ফাঁপা অংশ দিয়ে বেরিয়ে আসবার বেশ সন্দের সানিদি ভ্ৰাট বন্দোবস্ত আছে।-- লোকনাথের মন এক মহন্তে আবার অন্ধকার হয়ে গেল । নিৎঠর ধবংসের ৭ কি কৌশলময় আয়োজন ! মখি ভক্তিশাস্ত্রকার, এই ব্যত্মিা তোমার দয়াল, ঈশবর ৫ বসন্তের বাকী দিনগালো এবং সারা গ্রামকালটা এই ভাবেই কেটে গেল । অবশেষে একদিন কৌতুহলপ্রদ এক ঘটনায় লোকনাথের দঃখ, ব্যাকুলতা ও সন্দেহের এক অপ্রত্যাশিত রকমের উপসংহার ঘটল । সে সময়টা আষাঢ় মাসের প্রথম সপ্তাহ ৷ বহদিন বশিষ্ট হয়নি, অসহ্য রৌদ্রতাপে মাঠের ঘাসগলো জ’রে বিবণ" হয়ে গিয়েছে, বাতাস আগানের ঝলকের মতো তপ্ত। বৈকালের দিকে |কন্তু খাব জোরে বাতাস বইতে লাগল, এবং একটি পরে ঈশান কোণে খাব মেঘা জমল । নদীর বড় বাঁকটায় বড় বড় ঘাসের মধ্যে শায়ে লোকনাথ পদবী দিক চক্ৰবালে নবীন বিষার মেঘস্তুপের সম্ভজা একমনে লক্ষ্য করছিলেন, হঠাৎ তাঁর ডান হাতে মধ্যমা ও অনামিকা অঙ্গলির মাঝখানে কিসে যেন কামড়ালে । সে দিকে চোখ ফিরিয়ে হাত টেনে নিতেই দেখতে পেলেন একটা শঙ্খচড় সাপ ফণা তুলে হাতের সেখানে মহত্তে আর একটা ছোবল মারবার উপক্রম করতে গিয়ে হঠাৎ মাথা নীচু ক’রে লম্বা লম্বা ঘাসের মধ্যে বিদ্যৎবেগে অব্দশ্য হলো । কি করছি, না ভেবেই লোকনাথ সাপটার অদশ্যমান পােচ্ছটা তাড়াতাড়ি হাত