পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মৌরীফল Rdt হইয়া শ্রীগর, উদ্দেশে আহতি দিয়া অনিত্য বিষয়-বিষে-জন্তজারিত মনকে একটি স্থির করিবেন, না দেখেন যে আহিতির জন্য আলাদা করিয়া তোলা যে ঘি-টােক তাকে ছিল, তাহার সবটাই একেবারে নন্ট হইয়াছে ! তারপর প্রায় অন্ধ-ঘণ্টা ধরিয়া মােখাজ্যে-বাড়ীর অন্দর মহলে একটা রীতিমত কবির লড়াই চলিতে লাগিল। মািখয্যে-মহাশয়ের পত্রিবধ সশীলা প্রথমটা একটি অপ্রতিভ হইলেও সামলাইয়া লইয়া এমন-সব কথায় শবশারকে জবাব দিতে লাগিল যাহা একজন আঠারো-বৎসর-বয়স্কা তরণীর মখে সাজে না। পক্ষান্তরে কোটে বিপক্ষের উকীলের অপমানে ও ঘরে আসিয়া পত্রবধর নিকট অপমানে ক্ষিপ্তপ্রায় রামতন মািখয্যে পত্রিবধাের পিতৃকুল ও তাঁহার নিজের পিতৃকুলের তুলনামলক সমালোচনায় প্রবত্ত হইয়া এমন সব দািরহ পারিভাষিক শব্দের ব্যবহার করিতে লাগিলেন যে বোধ হয় বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ডুবালের গলেপ উল্লিখিত কুলােদশ-বিদ্যা অধ্যয়ন না করিলে সে সব বাঝা একেবারেই অসম্ভব । এমন সময় মািখয্যে মহাশয়ের ছেলে কিশোরী বাড়ী আসিল । তাহার বয়স পাঁচশ-ছাৰিবেশ হইবে, বেশী লেখা-পড়া না শেখায় সে চৌধারীদের জমিদারী কাছারীতে ন’টাকা বেতনে মহারীগিরি করিত । কিশোরীলাল নিজের ঘরে প্রবেশ করিয়া দেখিল ঘরে আলো দেওয়া হয়। নাই, অন্ধকারেই জামা-কাপড় ছাড়িয়া সে বাহিরে হাত-পা ধাইতে গৈল । তারপর ঘরে ঢকিয়া শানিল, ঘটঘটে অন্ধকার ঘরে সশীলা তাহার সম্মাখের বাতাসকে সম্বোধন করিয়া বলিতেছে যে, এ সংসারে থাকিয়া সংসার করা তাহার শক্তিতে কলাইবে না, অতএব কাল সকালেই যেন গরীর গাড়ী ডাকাইয়। তাহাকে বাপের বাড়ী পাঠাইয়া দেওয়া হয় । কিশোরী সে কথার কোন বিশেষ জবাব না দিয়া লন্ঠন, জৰালিয়া, বাঁশের লাঠিগাছা ঘরের কোণ হইতে লইয়া বাহির হইয়া গেল। ও-পাড়ায় রায়বাড়ীয় চন্ডীমণ্ডপে গ্রামের নিম্পকৰ্ম্ম যবকদিগের যাত্রার আখড়াই ও রিহাসেল চলিত-সেইখান অনেকক্ষণ কাটাইয়া অনেক রাত্রে বাড়ী ফিরিয়া আসা তাহার নিত্যকমের ভিতর । রামতন মািখযো মহাশয়ও অনেকক্ষণ বাহিরের ঘরে কাটাইলেন । প্রতিবেশী হাঁর রায় তামাকের খরচ বাঁচাইবার জন্য সকাল-সন্ধ্যায় মািখয্যে মহাশয়ের চন্ডীমণ্ডপ আশ্রয় করিতেন ; তাঁহাকে রামতন জানাইলেন যে তিনি খাব শীঘ্রই কাশী যাইতেছেন, কারণ, আর এ-বয়সেই - ইত্যাদি । তাঁহার এ বানপ্রস্থ অবলম্বনের আকাঙক্ষার জন্য দায়ী একমাত্র তাঁহার পত্ৰবধী সশীলা । সশীলা সকাল নাই সন্ধ্যা নাই একটা কিছ না বাধাইয়া থাকিতে পারে না । সে অত্যন্ত আনাড়ি, কোন কাজই গছাইয়া করিতে পারে না, অথচ দোষ দেখাইতে যাইলে ক্ষেপিয়া যায় । তাহার জন্য রামতন মািখয্যের বাড়ীতে কাক চিল বসিবার উপায় নাই । শবশার-শাশড়ীকে সে হঠাৎ অ্যাটিয়া উঠিতে পারে না বটে, কিন্তু এজন্য তাহার চেন্টার ব্রটি