পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ड्रशिका বিভতিভষণের রচনা সম্পবন্ধে কিছ আলোচনা করিব ইচ্ছা ছিল। কখনো কখনো এ বিষয়ে বিভতিবাবার সহিত কথা বলিয়াছি। তিনি খাঁশি হইয়াছেন, বলিয়াছেন, “বেশ হবে, তুমি লেখো।” কিন্তু কিছই করা হইয়া ওঠে না, সময়াভাব ও আলস্য প্রধান কারণ । আরও একটি কারণ ছিল, ভাবিয়ছি। এত ত্বরা কিসের ? আলোচনার যোগ্য অনেক বই বিভতিবাব, অবশ্য লিখিয়াছেন, কিন্তু আরও কিছ, লিখন না কেন। সার সমের কাছে আসিলে তবে তাহার পরা রূপটি সহজাগ্রাহ্য হয়, বিভতিবাবর রচনার ধারা তো এখনো সমাপ্তির কাছে আসে নাই, তবে আবার এত ত্বরা কেন। কিন্তু সাের সমের কাছে আসিবার আগেও যে সরকারের জীবন সমাপ্ত হইতে পারে এই স্থল কথাটা মনে পড়ে নাই, অন্তত বিভতিবাবার সম্পকে মনে পড়বার কোনো কারণ ছিল না। সস্থ সবল প্রাণবান পরিষ ছিলেন তিনি। মতু্য চরম যবনিকা টানিয়া দিয়া অকালে সমাপ্তি ঘটাইয়া দিল। বিভতিবাবার সাহিত্যিক খ্যাতি অক্ষয় হইল, কিন্তু তাঁহার সাহিত্যধারার আর প্রবাহিত হইবার সম্পভাবনা রহিল না। আমার প্রত্যাশিত সম আসিল না, আসিল চরম শান্তি। এক সময়ে ভাবিয়ছিলাম। এত ত্বরা কেন, এখন ভাবিতেছি আর বিলম্বােব কিসের ? এখন এ আলোচনায় তাঁহার খাশি হইবার সম্ভাবনা আর নাই ; নাই থাকুক, আমি তো খশি হইব, আর আমার মতো তাঁহার অন্যরাগীগণও খশি হইবেন। আশা করিতে পারি। বিভতিবাবর রচনার সাহিত্যিক আলোচনার ইচ্ছার মলে বিশেষ একটি কারণ ছিল, সে কারণ এখনও বিদ্যমান। সেটি বাঝাইয়া বলিলে বিভতিবাবর রচনা সম্পবন্ধে অনেক কথাই বলা হইবে, অমনি প্রসঙ্গত বতমান সাহিত্য সংক্রান্ত কুয়াশাও খানিকটা পরিভাকার হইবার সম্পভাবনা ৷ বিভীতিবাবার সমালোচকগণ বলিয়া থাকেন যে, তাঁহার রচনায় কালের ও সমাজের পরিচয় একেবারেই নাই। আবার বিভতিবাবর রচনার যাঁহারা অন্যরাগী তাঁহারা এ কথা স্পষ্ট না বলিলেও অন্যরাপ সন্দেহ যে তাঁহাদের মনেও আছে, কেবল বিরািন্ধপক্ষের শক্তিবন্ধি ভয়েই প্রকাশ করেন না, এমনও মনে হয় । বিভতিবাবার সমালোচকগণ বলেন যে, বৰ্তমান বাঙালী লেখকগণের সকলেরই রচনা সবকাল ও সবসমাজ দ্বারা চিহ্নিত, কিন্তু বিভতিভষণের অধিকাংশ রচনায় যেন দেশকালের কৈবল্য ঘটিয়াছে, সে-সব যে আজকার ঘটনা তাহা বিশেষ ভাবে বঝিবার উপায় নাই, তাঁহার রচনায় যে কোকিল ডাকিতেছে তাহা শনিয়া মনে পড়ে 'বাংলা দেশে ছিলাম যেন তিন শ বছর আগে” ! উদাহরণস্বরপ তাঁহারা বাংলাদেশের অন্য দইজন শ্রেষ্ঠ কথাশিল্পীর উল্লেখ করেন । তাঁহারা বলেন যে, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ও বনফলের রচনা মনে হয় যে, লেখক মধ্য-বিংশ শতাব্দীর বাংলা দেশের লোক। আর শািন্ধ, তাই নয়, দরিদরান্তের দেশদেশান্তের ভাবান্দোলনের আঘাত আসিয়া