ভমিকা তাঁহাদের শিল্পকমলকে নিরন্তর দোলাইতেছে ; বিভতিবাবর রচনায় তেমন দেখি কই ? তাঁহাদের মতে বিভতিবাবার শিলপ তরঙ্গহীন, কালের চাঞ্চল্যহীন সরোবরের পদ্ম। এ অভিযোগ যদি সত্য হয়, তবে চিন্তার বিষয় বই কি ৷ কিন্তু আদৌ কি অভিযোগ সত্য ? কোনো কৃতী শিল্পীর পক্ষে সবকাল ও সবসমাজকে এড়াইয়া শিল্পসটি করা কি আদৌ সম্ভব ? সাহিত্যের বহৎ ইতিহাস সমরণ করিয়া তো এমন একটি দলটান্তও চোখে পড়িতেছে না। তবে এমন হওয়া অসম্পভব নয় যে, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ও বনফলের রচনায় কালের ও সমাজের ঠিক যে লক্ষণগলি প্রকট বিভতিবাবর রচনায় হয়তো সেগালি প্রকট নয়। কিন্তু অন্য লক্ষণ যে প্রকট হয় নাই তা কে বলিল ? কাল যে কেবল নিরবধি আর পথিবী যে কেবল বিপােলা তাই নয়, দেশ ও কালেন্স ধম ও লক্ষণও বিচিত্র । এমন কোন দপণ আছে যাহাতে সমগ্র আকাশের প্রতিবিম্ব ধরে ? এমন কোন লেখক আছেন সমগ্র জীবনের ছাপ যিনি ধরিত্রে সক্ষম হইয়াছেন ? জীবন যখন ৯ অপেক্ষাকৃত সরল ছিল তখনকারও সমস্ত ছাপাই কি হোমারে আছে, না দান্তেতে আছে, না সেক্সপীয়রে আছে ? জীবন তে, কুমেই জটিল হইয়া উঠিতেছে। ডিকেন্স ও থ্যাকারে দই জনেই সমসাময়িক, এবং দই জনেই যগন্ধর ঔপন্যাসিক। কিন্তু ডিকেন্সের উপন্যাসে যাগে, যেসব লক্ষণ প্রকট, থ্যাকারের উপন্যাসে সেগলি প্রকট হয় নাই, অন্যগলি প্রকািট হইয়াছে। তাই বলিযা ডিকেন্সের তুলনায় থ্যাকারেকে কেহ নিন্দা করে না, এইটকু মাত্র বলে যে, তাঁহাদের দপণ ভিন্নমখে অবস্থিত, তাই ভিন্ন দিকের ছায়ােকৃতি ধরিয়াছে। কাজেই তারাশঙ্করবাব ও বনফলের রচনায় সবকালের ও সবসমাজের যে-সকল লক্ষণ প্রকট, সেগলি যদি বিভতিবাবর রচনায় না। থাকে, তাই বলিয়াই তিনি নিন্দাহা নহেন । তাঁহার রচনায় হয়তো সমাজের ও কালের অন্য দিকের ছায়া পড়িয়াছে। সেগলির সবরপ-আবিস্কারই যথার্থ সমালোচনাকায । সমালোচক ও নিন্দক ভিন্ন গোত্রের মানষ । এ যাগের কতকগলি লক্ষণ অত্যন্ত প্রকট, কাহারো চোখ এড়ায় না, এম'ন কি সংবাদপত্রের রিপোর্টারের পক্ষেও সেগালি সহজাগ্রাহ্য। তেমন একটি লক্ষণ শ্রমিক-ধিনিক-সংঘাত, আর-একটি লক্ষণ সবজনীন অসন্তোষ । এই দাইটি ধাৰা অনসরণ করিলে বাকি অনেকগলি লক্ষণকে উপধারা রাপে পাওয়া যাইবোঁ । বতমান অধিকাংশ বাঙালী লেখকের রচনা এই সব ধারা ও উপধারার দ্বারা চিহ্নিত। স্বীকার করিতেই হইবে যে, বিভতিভষণের রচনার এগলি বৈশিষট্য নয়। ইহাতে এইটকু মাত্র প্রমাণ হয় যে, তিনি বিশিস্ট। সেটা তো নিন্দান বিষয় নয় । R বিভতিভষণের অধিকাংশ উপন্যাস ও ছোটগলেপার অবলম্বন কি ? মানষেণ প্রাত্যহিক জীবন । মানষের প্রাত্যহিক জীবনে ছোটখাটো সখ-দঃখের যে লীলাচাণ্ডল্য আছে, সখের ভিতরে যে দঃখের আভাস আছে, দঃখের মধ্যেও
