পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Vf বিভতিভষণের শ্রেষ্ঠ গল্প --খেলে বঝতে । --দিদি, এখনও আপনার মায়ার বন্ধন গেল না ? আপনার তো দটোএকটা গাছ, আমার তিনটে বড় বাগান-কলমের বোম্বাই, মালদ, ফজলিমায় ন্যাংড়া পৰ্যন্ত । আমি তো ফিরেও চাইনি ওসব দিকে । ছেলেরা কাঁদে, বলে এখন কি কাশীবাস করবার সময় হয়েচে তোমার ? আমি বলি, না, সংসারের মায়ায় আর না । গানে বলে ‘কেবা কার পর, কে কার আপনি ? ( এই মরোচে, মাগী আবার শহর করেচে । ) "কালশয্যা পরে, মোহতন্দ্ৰা ঘোরে, দেখে পরপরে অসার আশার সর্বপন ।” তা আমি বলি-এতকাল তো সংসারের বন্ধনে ঘরে আশার স্বপন অনেক দেখলাম। এইবার পরকালের কথা ভাবি । আর আমার এই যে গরদেবী, উনি দেহধারী মক্তপরাষ-ওঁর কৃপায়---(নীরজা উদ্দেশে প্রণাম করলেন । ) দ্রব ঠাকরণ মাখে বল্লেন-তা তো বটেই। -- -চলন দিদি ওবেলা বাবা বিশবনাথের মন্দিরে সেই মাইজদীর কাছে আপনাকে নিয়ে যাই--আপনার বয়স আমার চেয়ে বেশি, আপনার এখন উচিত গরমেন্ত্রে দীক্ষা নিয়ে সব বন্ধন মক্ত হয়ে একমনে কাশীবাস করা । আমাদের আর কদিন দিদি ? শমন তো দোরে দাঁড়িয়ে-সব রকম তো দেখলাম শনলাম । দ্রব ঠাকরণ মনে মনে বল্লেন-তোমার মডু করলাম, মাগীর কথার আবার ধরন শোনো না। ভাটপাড়ার ভাট চাঙ্গিজ এসেছেন ! মাখে বল্লেন-মাংলি। ব’লে একটা গাই গোর ছিল আমার-বন্ড ন্যাওটাে । যেখানে যাবো, সেখানে যাবে। আমার হাতে না খেলে তার পেট ভরতো না । এই বেশ কচি কাঁচি বাঁশপাতা এনে মখে দেতাম তুলে-আর -আঃ আবার ঐসব কথা আপনার মাখে । জড়ভরতের কথা জানেন তো ? অত বড় জ্ঞানী-পৰিবািজন্মে এক হরিণের মায়ায় তাঁর সব গেল। ভগবানের চিন্তা করান-ভগবানের চিন্তা করােন-সব মিথ্যে। সব মিথ্যে । দ্রব ঠাকরণ কোনো কথা বল্লেন না। ওঁর কথা তাঁর একেবারেই ভালো লাগে না । মাগী যেন কি ! কি বলে, কি করে । মাগী এমন পাষাণ যে, ছোট ছেলের বিয়েতে বাড়ী গেল না । মািখ দেখতে আছে। ওর ? ছিঃ সারারাত্রি সবপ্নের ঘোরে দেখলেন তাঁর গোপীনাথপরের ভিটেতে চালাঘরের ছাঁচতলায় মালান মখে ছলছল চোখে তাঁর মাংলি দাঁড়িয়ে রয়েচে-ন'বেী তাকে যত্ন করচে না, বাড়ী হয়েচে মাংলি, তেমন দধি তো আর দিতে পারে নামাংলিকে তিনি তার মায়ের পেট থেকে টেনে বার করে এতকাল নিজের মেয়ের মত পষেছিলেন--তিনি নেই, কে ওকে দেখে ? কাঁঠাল হয়েচে বটে খয়েরখাগী গাছটাতে ! এত কাঁঠাল তিন-চার বছরের মধ্যে হয়নি। তিনি নাইতে যাচ্ছেন্ন নদীতে, মােখাজ্যে-গিন্নী বলচে-হ্যাঁ খড়ী-মা, এবার তোমার গাছে কী কাঁঠাল ধরেচে ! তা আমায় একটা দিও, তোমার নাতিদের খেতে দেবো।--