পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একটি ভ্রমণ-কাহিনী ኴሃq —ছিঃ ও-কথা বলতে নেই। জামাই মানষ, এনে ফেলেছেন যখন তখন সে দাম দিতেই হবে। সবাই মিলে মাছটা তো খাওয়া হয়েছে ? জামাই একা খাননি । -খাননি। তাই কি ? আমার সংসারে এক পো খয়রা মাছ কিনলে চলে যায় ছ’ আনা দিয়ে। পাঁচ টাকার মাছ কিনে একদিন খেয়ে আমার লাভটা কি হলো বলতে পাের ? যতই উলেটা তক করুন, তাঁকে শেষ পৰ্যন্ত সবোধের মত মাছের দামটা জামাতা বাবাজির হাতে গজে দিতে হলো যখন তিনি যাচ্ছেন। মিটে গোল ব্যাপার । আটটা টাকা বািক করে রাখা ছিল, তার মধ্যে ইলিশ মাছের ঠ্যালায় গেল পাঁচটা টাকা অকারণে বেরিয়ে । শম্ভু ডাস্তারের ডিসপেনসারিতে বসে দই বন্ধ কথা বলছেন । এবার কিন্তু ভ্রমণের আলোচনা নয়, কোথাও যাওয়া তাঁদের হবে না। দরজনেই বঝেছেন। বোটানিক্যাল গাডেনের বস্তাপচা আটা ময়দার কথা উঠেছে । ভ্রমণের সম্বন্ধে একটা কথাও কেউ বলেননি। আজ। কাল ষাঠী । হঠাৎ গোপীকৃষ্ণবােব উসখস করতে করতে পকেট থেকে একখানা রঙীন কাড' বের করে বললেন-হ্যাঁ-এই বলছিলাম কি, আমাদের আপিসের বঙ্কু সরকার কাল আপিস বন্ধের দিন। এখানা দিয়ে গেল । ওদের গ্রাম লাঙলপোতায় সৰবজনীন দাগোৎসব হবে তাঁরই নেমন্তান । রামায়ণ-গান হবে, চন্ডী হবে দ’রাত। যাবে ? বেশি দীর নয়, বারাসাত স্টেশনে নেমে দ্য মাইল । চলো, পিজোর ছটিটা তবও কলকাতার বাইরে।--আর সে বেশ জায়গা, ছেলেছোকরাদের দল মিলে রাস্তা করেচে, ঘাট করেচে, জঙ্গল কেটেচে। একটা পরনো শিবমন্দির আছে নাকি অনেককালের । তাহলে কাল সকাল সাতটায় শেয়ালদ” থেকে দত্তপকুর লোক্যাল ছাড়বে।-ওতেই চলো যাওয়া যাক। দেখবার মত ॐ শম্ভু ডাক্তার উৎসাহের সঙ্গে বল্লেন-বেশ, বেশ, সে বেশ বেড়ানো হবে এখন ! চলো তাই, আমি ঠিক সময়ে রেডি হয়ে সেন্টশনে হাজির হবো কাল । পরবত্তী তিনদিন দই বন্ধর পরম আনন্দে লাঙলপোতায় কাটে । সত্যি বেশ জায়গা। অনেক কিছ দেখবার আছে। একটা পরনো শিবমন্দির। চৌধরিীদের বড় মজা দীঘি। গাঁয়ের ছেলে-ছোকরাদের নিজেদের তৈরী মেটে রাস্তা। শনিবারে-সোমবারে হাট বসে-বোগান-কুমড়ো-ঝিঙে রাঙা আল বিক্ৰী হয়। রামায়ণ-গান হলো নবমীর রাত্রে। পরদিন হলো গ্রামের দলের কেটে যাত্ৰা। খাওয়া-দাওয়াও কদিন বেশ হােল। বঙ্কু সরকার অতিথি ९ळ ( । খব খাশি গোপীকৃষ্ণবাব ও শম্ভু ডাক্তার।