পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নসমোমা ও আমি N6 আমাদের গ্রামেও তাঁর তেমন খাতির যত্ন নেই। বল্লেন"-এই গাঁয়ে একটা ঘর করলে ভালো হয়। আমি বল্লাম-কেন, শশরেবাড়ী বাস করবে ? কেউ কিছু বলবে না ? -বলক গে। কাকার ওখানে আর ভালো লাগে না। --দেখা ভেবে । —তোমাদের গাঁয়ের লোকগালো যেন কেমন-কেমন। ভালো করে কথাই दल भी I আমার রাগ হলো, বল্লাম--তাড়,ঘোঁটা জামাইকে কে খাতির করবে। শনি ? স্বামী হেসে চোখ টিপে বল্লেন-ইঃ ! রোজ রোজ রাত্তিরে খাজা খাওয়ার সময় তো খািব ভালো লাগে ? দ-একদিন পরে উনি চলে গেলেন । যাবার সময় আমার হাতে তেরো আনা পয়সা দিয়ে বলে গেলেন---এই পয়সা দিয়ে খাবার কিনে খেও । মাসখানেক থাকো, তারপর এসে নিয়ে যাবো । আর আসেন নি। তিনি। সেই মাসের শেষের দিকে পরনো আমাশা রোগে তিনি আমায় সিথির সিদর আর হাতের শাখা ঘাঁচিয়ে ইহলোক ত্যাগ করলেন। বাবা চিঠি পেয়ে আমাদের প্রথমে কিছ, বলেন নি, তারপর দুদিন পরে মাকে একদিন বল্লেন-হ্যাঁ একটা কথা, জামাইয়ের বড় অসমুখ, চিঠি পেয়েচি । মা আড়ান্ট সরে বলে উঠলেন -সে ফি গো ! এতক্ষণ বল নি কেন ? হাটে চিঠি পেলে ? কই দেখি চিঠি । বাবা আমতা-আমতা করে বলেন--তা-ইয়ে মনে ছিল না। তা নয়ইয়ে আমি কান খাড়া করে পাশের ঘরে বসে সব শনাচি । আমার বকের মধ্যে টিপটপ করচে। মাথায় রক্ত উঠে যাচ্ছে যেন । জিব শকিয়ে আসচে। আমি বাঝতে পেরেচি। সব । বাবা অত্যন্ত ব্যক্তিবাগীশ লোক, জামাইয়ের অসখেসংবাদে চুপ করে বসে থাকবার মানষে নন । মা ছাঁটে হাঁপিয়ে বাবার কাছে এসে বল্লেন--তার কাছে এখনি চলে যাও । মেয়ের যাবার কথা লেখেনি ? ওকেও নিয়ে যাও— বাবা শরৎকমখে বল্লেন-আর সেখানে গিয়ে কি হবে গিন্নী ! সব শেষ হয়ে গিয়েচে ! মা মেঝের ওপর আছড়ে পড়লেন আত্ত চীৎকার করে । আমি কিন্তু বেশ সহজ ভাবেই কথাটা শািনলাম। কারণ আমি আগেই বঝেতে পেরেচি বাবা কি বলবেন । এইভাবে আমার বিবাহিত জীবনের ইতি হয়ে গেল। কি করবো, আমায় অদম্ৰাট। বাবা তো বড়োহাবড়া স্বামীর হাতে আমায় দেননি, ছোকরা দেখে দিয়েছিলেন, আমার কপালের লেখা, কারো দোষ নেই। আমার কিন্তু বিশেষ কোনো দঃখ নেই মনে । বিশেষ কিছ, যে হারিয়েচ, বিশেষ কোন অভাববোধ